হেক্টরে বিক্রি ৭ লাখ টাকা
হারুন-অর-রশীদ : খুলনা কৃষি অঞ্চলে কূল চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন কৃষক। কূল চাষের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন ২০হাজার ১০০কৃষক। এই অঞ্চলে ১হাজার ৫৪৪ হেক্টর জমিতে কূল চাষ করা হয়েছে। ভালো দামে বিক্রি করছেন কৃষক। এটি একটি জনপ্রিয় ফল ও পুষ্টি মান। বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি অঞ্চলের ৪জেলায় ১৭ হাজার ২৫৩ মেট্রিকটন কূল উৎপাদন করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে বিক্রি হবে ৭ লাখ টাকা।
সূত্র জানিয়েছেন, খুলনা কৃষি অঞ্চলের মধ্যে খুলনা জেলায় ৩ হাজার ১২০জন কৃষক চাষ করেছে ৩১২ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ৬২৪০ মেট্রিকটন। বাগেরহাট জেলায় ৩ হাজার ২৫ জন চাষ করেছেন ৩৩৩ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৭৬৩ মেট্রিকটন। সাতক্ষীরা জেলায় ১৩ হাজার ১০০ কৃষক চাষ করেছেন ৮১০ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ৭ হাজারর ৬৯৫ মেট্রিকটন এবং নড়াইল জেলায় ৮৫৫ জন কৃষক চাষ করেছেন ৮৯ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ৫৫৫ মেট্রিকটন কূল। প্রতি বছর চাষ ও উৎপাদন বাড়তেছে।
গোপালগঞ্জ-খুলনা- বাগেরহাট -সাতক্ষীরা-পিরোজপুর জিকেবিএসপি প্রকল্প থেকে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা সোনাবাড়িয়া, তালা, ডুমুরিয়া ও গোপালগঞ্জের মোকসুদপুরে ২৫জন কৃষক এক বিঘা করে ২৫টি প্রদর্শনী প্লট করেছে। এই প্রকল্প থেকে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও গাছ সরবরাহ করা হয়েছে এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্প থেকে বলসুন্দরী হাইব্রিড জাতের কূল চাষ করানো হয়েছে। বাম্পার ফলন হয়েছে। পাইকারী ৪০-৪৫টাকা কেজি বিক্রি করছেন কৃষক। তারা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে থাকেন। পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা।
সূত্র জানান, কৃষকরা আপেল, বলসুন্দরী, নাইন্টি, নারিকেল, টকমিষ্টি, বাওকূল, কাশ্মিরী কূল, থাইকূল ও বাই আপেল কূলসহ নানাজাতের কূল চাষ করেছেন। কলম রোপণ করায় অল্প সময়ের মধ্যে ফল আসে ও ফল ধরে। বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করেছেন এবং স্বল্প খরচে লাভ বেশী। অর্থনৈতিক ভাবে ঘুরে দাড়িয়েছেন তারা। কূল চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গোপালগঞ্জের মোকসুদপুরের কদমতলা গ্রামের কৃষক মো. জাকির হোসেন ও ডুমুরিয়ার বরাতিয়া গ্রামের জিয়াউদ্দিন শেখ জানান, প্রতি কেজি পাইকারী ৪০-৪৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। কূল চাষে খরচ কম। লাভ বেশী। রোপণের পর মাত্র একবার সার প্রয়োগ করতে হয়।
প্রকল্প পরিচালক অমরেন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণলদ্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সঠিক নিয়মে চাষাবাদ করায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তদারকি করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহন কুমার ঘোষ বলেন, কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে তদরকি করা হচ্ছে। ফলের মৌসুম হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। শীতকালে অন্য কোন ফল পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই ছোট বড় সকলে কূল পছন্দ করে। প্রতি হেক্টরে ৭লাখ টাকা বিক্রি হবে। এ কারণে কূল চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।