বকেয়া না পাওয়ায় পুঁজির সংকট
শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনায় কোরবানি পশুর চামড়ার বাজার জমেনি। লবনের মূল্য বৃদ্ধি, নির্ধারিত বাজার না থাকা, ট্যানারির মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়া, পুঁজি সংকটসহ নানা অসুবিধার কারণে প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়িরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। ফলে, সরকার ঘোষিত মূল্যের অনেক কম দামে এবরে কোরবানি পশুর চামড়া বিক্রি হয়েছে। বড় গরুর চামড়া প্রতি পিচ বিক্রি হয়েছে ৫০০-৫৫০ টাকায়। আর ছোট গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩০০ টাকা দামে। অন্যদিকে ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে নামমাত্র দামে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও খুলনার শেখপাড়ার পওয়ার হাউজ মোড়ে কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচা হয়। ঈদের দিন সকাল থেকে গভির রাত পর্যন্ত চলে এই কেনাবেচা। স্থায়ী, ভ্রাম্যমান ও মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে ওঠে শেখপাড়া পাওয়ার হাউজ মোড়। তবে খুলনা মহানগরীতে স্থায়ী কোন চামড়ার বাজার না থাকায় ক্রেতা বিক্রেতারা প্রতিবছরের মতো এবারও চামড়া কেনাবেচা করেন রাস্তার উপর।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে পাওনা টাকা না পাওয়ার কারণেও চাহিদা মতো অনেক ব্যবসায়ী চামড়া কিনতে পারেননি। এতিকে চামড়া বিক্রেতাদের অভিযোগ, চাহিদার অজুহাত দেখিয়ে সরকারের নির্ধারিত দামের চাইতে অনেক কমদামে চামড়া কিনেছেন চামড়া-ব্যবসায়ীরা।
মাওলানা আবুল হোসেন নামে একজন মাদ্রাসার শিক্ষক বলেন, শেখপাড়ার চামড়া পট্রিতে বিক্রির জন্য পাঁচটি চামড়া নিয়ে এসেছিলাম। চামড়া গুলো মাত্র দুই হজার টাকায় বিক্রি করেছি। একদিন রাখলে পঁচে যাবে বলে পানির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। চামড়ার প্রকৃত দাম না পাওয়া গেলে মাদ্রাসা চালাতে অসুবিধা হয়ে যাবে।
খুলনার কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ঘোষ বলেন, খুলনার চামড়া ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ টাকা ঢাকার ট্যানারি মালিক ও আড়তদার নিকট বকেয়া রয়েছে। এই ঈদেও তারা কেউ টাকা পরিশোধ করেননি। ফলে, এ বছর চাহিদা মতো চামড়া ক্রয়ের টাকা ছিলনা কারো কাছে। ব্যাংকগুলোও চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয় না। ফলে তারা চাহিদা মতো চামড়া কিনতে পারেননি।
খুলনা জেলা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম ঢালী বলেন, খুলনায় চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ী কোনো চামড়ার মার্কেট না থাকার কারণে তারা সড়কের উপর অস্থায়ীভাবে চামড়া কেনাবেচা ও প্রক্রিয়াজাত করতে বাধ্য হন। বর্তমানে জিরো পয়েন্টে দুটি গুদামে এবং নগরীর ট্রাক টার্মিনালের পাশে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে চামড়া মজুত করা হয়। ছোট ব্যবসায়ীরা সারা বছর চামড়া কিনে এ দুই স্থানেই মজুত করেন। কিন্তু কোরবানির ঈদে বিপুল পরিমাণ চামড়া আসায় সেখানে মজুত রাখা সম্ভব হয় না।