মোঃ এজাজ আলী : খুলনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানী প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। তাদের দৌরাত্ম্যে নানা হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা সাধারন রোগীরা। চিকিৎসকের কক্ষে সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও মানছেন না কেউই। রোগীরা বের হলেই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে চলে টানা হেঁচড়া। এতে ক্ষুদ্ধ হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। সপ্তাহের ছয়দিনই এমন চিত্র চোখে পড়ে এ সরকারি হাসপাতালে।
সপ্তাহে দু’দিন দুপুর দেড়টার পর ভিজিট করার নিয়ম থাকলেও তা শুধু কাগজে-কলমে রয়েছে। বাস্তবে নেই। অপরদিকে রয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের দালালদের দৌরাত্ম্য। সরকারি এ হাসপাতালে সেবা নিতে আসা গ্রাম-গঞ্জের অসহায় রোগীরা তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ও আন্তঃবিভাগে বিভিন্ন চিকিৎসকের কক্ষের ভিতরে ও সামনে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় লেগেই আছে। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে তারা ভিজিট করে রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। কোনো রোগীকে চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকতে দেখলেই ৮-১০ জন প্রতিনিধি ওই কক্ষের সামনে এবং ভেতরে ভিড় করছেন। আরেক গ্রুপ দাঁড়িয়ে থাকেন হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে। আবার কেউ-কেউ রোগীকে অপেক্ষায় রেখে তাদের ভিজিট সেরে নিচ্ছেন। প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে এসব প্রতিনিধিদের নানান দৃশ্য। সরকারি এ হাসপাতালটিতে রোগীরা ডাক্তারের কক্ষ থেকে বের হওয়া মাত্রই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের পথে দাঁড় করিয়ে ব্যবস্থাপত্র টেনে নিয়ে সেটির ছবি তুলে রাখেন। প্রায়ই দেখা গেছে, বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা জরুরী বিভাগ ও বর্হিবিভাগের চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ভিড় করে আছেন। সেই ভিড় ঠেলে চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকতে হচ্ছে রোগীদের। আবার ভেতরে প্রবেশ করলেও দেখা যায় সেখানেও চলছে ভিজিট।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সবিজুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধপত্র থেকে শুরু করে কোন কিছুতেই ঘাটতি রাখেনি। এই সেবা যাতে সাধারন মানুষ শতভাগ সুফল ভোগ করতে পারেন সর্বত্রভাবে সেই চেষ্টাই করবো। তিনি বলেন, হাসপাতালে রোগীরা যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন, সেজন্য সপ্তাহে দু’দিন হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা দুপুর দেড়টার পর ভিজিট করতে পারবেন।