জন্মভূমি ডেস্ক : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় একনেক সভা। এতে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম জানান, আজকে একনেক সভায় খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং চট্টগ্রামে একটি বার্ন ইউনিট স্থাপনসহ ১০টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ১০টি প্রকল্পই অনুমোদন দিয়েছেন। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ২০৩ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৩৬০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নিজের নাম ব্যবহার করে আর প্রকল্প যাতে না নেওয়া হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, একনেক সভায় সংশোধন এবং নতুন প্রকল্প মিলিয়ে ১০টি প্রকল্প উত্থাপন করা হয়েছে। তারমধ্যে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ৩টি; কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ২টি; আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ৩টি এবং শিল্প ও শক্তি বিভাগের দুটি। তা ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধি এবং পরিকল্পনামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত আরও ৪টি প্রকল্প প্রস্তাব একনেকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব স্ট্যাটিসটিকস সার্ভিস বেসড অন প্ল্যাটফর্ম প্রকল্প, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের চায়না এইড প্রজেক্ট অব বার্ন ইউনিট অব চিটাগং মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ইন বাংলাদেশ শীর্ষক প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং বরিশাল জোলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রোগ্রাম ফর সাসটেইনেবিলিটি ইন দ্য টেক্সটাইল অ্যান্ড লেদার সেক্টর (স্টিল) প্রকল্প, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত সিলেটের ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেস এ রূপান্তরকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঢাকা জেলায় বিদ্যমান সার্কিন হাউজ ভবনের স্থলে নতুন অত্যাধুনিক সার্কিট হাউজ ভবন নির্মাণ, জননিরাপত্তা বিভাগের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নবসৃজিত গাজীপুর (৬৩ বিজিবি) ব্যাটালিয়ানের অবকাঠামোগত বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি) : ডিডিএম অংশ (৩য় সংশোধিত)।
এ ছাড়া জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের ‘তিতাস গ্যাস ফিল্ডের লোকেশনেতে ওয়েলহেড কম্প্রেসর স্থাপন (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। তা ছাড়া পরিকল্পনামন্ত্রী কতৃক অনুমোদিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্ট্রেনথেনিং দ্যা ক্যাপাসিটি অব ওয়েদার অ্যান্ড ক্লাইমেট সার্ভিসেস প্রকল্প, স্থানীয় সরকার বিভাগের রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়োর্ডে বিভিন্ন রাস্তায় সড়ক বাতি স্থাপন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প। এ ছাড়াও একসিলেটিং ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল ইনক্লুশন অব স্ম্যালহোল্ডার ফার্মারস দো স্ট্রং প্রডিউসারস অরগানাইজেশন (একসেস) প্রকল্পগুলো একনেক সভাকে অবহিত করা হয়।
একনেক সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র. আ. ম, উবায়দুল মুকতাদির চৌধুরী; ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।