জন্মভূমি রিপোর্ট : সরকারি আদেশ অমান্য করে পূর্বের দরেই খুলনার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু, পেঁয়াজ, ডিম, সয়াবিন তেল। ব্যবসায়ীরা বলছেন পূর্বের দরে পণ্য ক্রয় থাকায় সরকার নির্ধারণ মূল্যে বিক্রি করতে গেলে লোকসানে পড়তে হবে। সরকারি আদেশ পালনে ভোক্তা অধিকার দপ্তর মাঠে থাকলেও কোন পরিবর্তন এখনও আসেনি।
বাজারের লাগাম টানতে গত বৃহস্পতিবার সরকার। তিন পণ্য-আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। এ সিদ্ধান্ত কার্যকরে সর্বাত্মক শক্তি প্রয়োগের কথাও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গত তিন দিনেও নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। প্রতি কেজি আলুর দাম খুচরা পর্যারে ৩৫-৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এখনও বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। পেঁয়াজের দাম খুচরায় প্রতি কেজি ৬৪-৬৫ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা দরে। আর প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা বেঁধে দেওয়া হলেও বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকায়। সরকারের আদেশের প্রতি ব্যবসায়ীরা এখনও বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চলেছে। আর পকেট ফাঁকা করছে ভোক্তার।
শনিবার খুলনার বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি আলু ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকায় বিক্রি করছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। আর প্রতি হালি ডিম সর্বোচ্চ ৫৩ টাকায় বিক্রি হয়। অর্থাৎ প্রতি পিসের দাম হয় ১৩ টাকা ২৫ পয়সা।
খুলনা বড় বাজারের মুদি ব্যবসায়ী জাহীদুর রহমান, বলেন, পূর্বে আলু কেনা ছিল প্রায় ৩৯ টাকা কেজি দরে। আর পেঁয়াজ কেনা হয়েছিল প্রতি কেজি ৬৬ টাকায়। প্যাকেটজাত সয়াবিন তেলের লিটার কেনা ছিল ১৬৯ টাকা কেজিতে। তাই সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা এই মুহূর্তে সম্ভব না।
গল্লামারী বাজারের ডিম ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, প্রতি হালি ফার্মের ডিম কেনা হয়েছে ৪৮ টাকায়। এখন হাঠাৎ করে কি ভাবে একই দামে বিক্রি করি। তিনি বলেন, সরকার পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দায়িত্ব শেষ করে বসে থাকে। পাইকারি বাজারে দাম না কমালে আমরা খুচরা বিক্রেতারা কি করে দাম কমিয়ে বিক্রি করব। যারা দাম বাড়ায় তাদের না ধরে তদারকি সংস্থা আমাদের ধরে। জরিমানা করে। এছাড়া ক্রেতারাও আমাদের গালাগাল করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণের কথা জানান। তিনি বলেন, কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু ২৬-২৭ টাকায় বিক্রি করতে হবে। খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করতে হবে ৩৫-৩৬ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ পাইকারি পর্যায়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩-৫৪ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে ৬৪-৬৫ টাকা। এছাড়া ডিমের দাম নির্ধারণ উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।