শেখ আব্দুল হামিদ/ ফারুখ হোসেন
পদ্মা সেতু নির্মাণের সাথে সাথে খুলনা অঞ্চলের সড়ক মহাসড়কে শুরু হয় ব্যপাক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। কোভিড-১৯, অবৈধ স্থাপনা অপসারণ, ভ‚মি অধিগ্রহণসহ নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ এখনও চলমান রয়েছে। সড়ক বিভাগ ইতোমধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পের ৪০ থেকে প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।
আরমাত্র একদিন পরেই পদ্মা সেতু চালুর মধ্যে দিয়ে অবহেলিত খুলনাবাসীর স্বপ্ন এবার পূরণ হতে চলেছে। খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের খুলনা শহরাংশে ৪ কিলোমিটার ময়লাপোতা থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত চার লেনে উন্নিত হচ্ছে। ১০০শ’ ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কাজের ৬৬.৮৪ ভাগ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। দিঘলিয়া-আড়–য়া-গাজিরহাট-তেরখাদা সড়কের প্রথম কিলোমিটারে ভৈরব নদীর উপর ভৈরব সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ৬১৭.৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ চলছে। প্রায় ২২.৫৫ ভাগ কাজ এপর্যন্ত শেষ হয়েছে। বেতগ্রাম-তালা-পাইকগাছা-কয়রা সড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩৯.৫৮ কোটি টাকা। কাজের ৫৭.২৬ ভাগ শেষের পথে রয়েছে। খুলনা জোনের আওতায় ৭০.৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরঘাটা-আড়–য়া-গাজিরহাট-তেরখাদা সড়কে কংক্রিট সেতু নির্মাণ কাজ ১৩.০২ ভাগ শেষ হয়েছে। খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি টাকা। গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেষ্ট অফিস পর্যন্ত ১৮.১১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্থকরণ, মজবুতিকরণ কাজ চলমান রয়েছে।
সদ্য অনুমোদিত খুলনা শহর বাইপাস জাতীয় সহাসড়কের এবং খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক সড়কের জিরোপয়েন্টে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ইন্টারসেকশন কাজ শুরুর পথে রয়েছে। এছাড়াও আরও অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকার কাজ।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই খুলনা উন্নয়নে রীতিমত বিপ্লব চলে আসে। এখন অনেকটা প্রান ফিরে পেয়েছে দীর্ঘ দিনের ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট। চলাচলের অযোগ্য রাস্তাঘাট সংস্কারের পাশাপাশি নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ ও গৃহীত প্রকল্পগুলো একে একে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলেছে। বিশেষ করে গত এক বছরে এ সেক্টরে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ্য চোখে পড়ার মত। এতে স্বস্তি ফিরে আসছে উপেক্ষিত এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে। হাতে নেয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সাথে সাথেই খুলনার উন্নয়ন এগিয়ে যাবে তড়িৎ গতিতে।
খুলনা সাতক্ষিরা সড়ক উন্নয়ন কাজ শেষ হলে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের সঙ্গে খুলনাসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে। এতে গতি ফিরে পাবে ভোমরা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম। পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানও বদলে যাবে। পদ্মা সেতু চালু হলেই ভোমরা স্থল বন্দরের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে এবং এই সড়কের উপর সবচেয়ে বেশি চাপ পড়বে।
খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলি মাসুদ পারভেজ দৈনিক জন্মভ‚মিকে বলেন, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রতিটি সড়ক মহাসড়ক প্রশস্থ ও উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। পদ্মা ব্রিজ চালু হলেই খুলনা অঞ্চলের প্রতিটি সড়ক মহাসড়ক হবে অতিগুরুত্বপূর্ণ। সে কথা মাথায় রেখে দ্রæত উন্নয়ন কাজ এগিয় চলেছে। কোভিডের মত বৈশিক মহামারী থেকে মুক্ত থাকতে পারলে অবশ্যই এসব কাজ দ্রæত শেষ করা সম্ভব হবে।