জন্মভূমি রিপোর্ট
খুলনায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ লাগমহীন ভাবেই আঁচড়ে পড়ছে সর্বত্র। গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা সিপিআর ল্যাবে ২৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। আর এসময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। এর আগের দিন ৭ জুন সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয় ১৩১ জন। চলতি মাসের ৮দিনে আক্রান্ত ৬৭৫ জন আর প্রাণ গিয়েছে ১৬ জনের। এভাবে প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা। খুলনাতে কঠোর বিধি-নিষেধ ঘোষণা হলেও কোথাও তার প্রভাব পড়ছে না। প্রশাসনের তৎপরাতাও ঢিলেঢালা। শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জের সর্বত্রই স্বাস্থ্য সচেতনতার বালাই নেই। চয়ের স্টল থেকে শুরু করে হাট-বাজার সপিংমল খেলার মাঠ সব জায়গাতেই লোক সমাগম লেগেই আছে।
চলতি মাসের ৮ জুন পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৭৭১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। হিসাব মতে শতকরা আক্রান্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৪.৩৫ জন। আর প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে গড়ে ২ জনের। আক্রান্তের হার খুলনা সিটির সাথে সাথে নয় উপজেলাতেও বেড়ে চলেছে। করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৯০২ জন আর মৃত্যু হয়েছে ১৮৯ জনের।
আমাদের মেডিকেল প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম জানান, খুলনায় গতকাল (৮ জুন) পর্যন্ত করোনায় ২ নারী সহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সোমবার রাত ১১ টা ৩০ মিনিটে রুমিছা বেগম (৫১) মারা যান। তিনি গত ২৮ মে বিকালে করোনা পজিটিভ নিয়ে ভর্তি হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি দিঘলীয়া উপজেলা সদরের আব্দুর রহমানের স্ত্রী। অপরদিকে মঙ্গলবার রাত ২ টা ৫৫ মিনিটে মারা যান সেলিম জমাদ্দার (৪৫)। তিনি গত ৫ জুন করোনা পজিটিভ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কেয়ার বাজার গ্রামের সাত্তার জমাদ্দারের ছেলে। মঙ্গলবার সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছেন আব্দুল মালেক (৭৫) তিনি গত ৫ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি ফুলতলা উপজেলার রাড়ীপাড়া গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে। ভোর ৫ টা ১০ মিনিটে করোনা উপসর্গে মারা যান মোঃ ফারুক শেখ (৪০)। তিনি গত ৭ জুন সোমবার রাত ১০ টা ৩৫ মিনিটে করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ইয়োলোজন ইউনিটে ভর্তি হন। তিনি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার গচাপাড়া গ্রামের মৃত মোমিন উদ্দিনের ছেলে। একই দিনে করোনা ইউনিটে তুষার কান্তি (৫৮) মারা গেছেন। তিনি গত ৪ জুন রাতে করোনা পজিটিভ নিয়ে ভর্তি হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুর ১ট ১৫মিনিটে মারা যান। তিনি ফুলতলা উপজেলার বানিয়া পুকুর গ্রামের মৃত মতিলালের ছেলে। এর ১৫ মিনিট পর আয়জান বেগম (৭৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। তিনি গত ৫ জুন দুপুরে করোনা পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে মারা যান। তিনি কয়রা উপজেলার ষোলহালীয়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের স্ত্রী।
এপর্যন্ত খুলনা সিটিতে আক্রান্ত হলেন ৮ হাজার ৮৫২ জন আর মৃত্যু হয়েছে ১৪৬ জনের। আর উপজেলা গুলোর মধ্যে দাকোপে আক্রান্ত ২৩৮ জন মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের, বটিয়াঘাটায় আক্রান্ত ১৪১ জন প্রাণ গেছে ৫ জনের, রূপসায় আক্রান্ত ৩৯৮ জন মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের, তেরখাদায় আক্রান্ত ২২৯ জন মৃত্যু ২ জন, দিঘলিয়ায় আক্রান্ত ২১২ জন মৃত্যু ৩ জনের, ফুলতলায় আক্রান্ত ৩২৫ জন মৃত্যু ১ জনের, ডুমুরিয়ায় আক্রান্ত ২৬৪ জন মৃত্যু ৩ জনের, পাইকগাছায় আক্রান্ত ২৫৫ জন মৃত্যু ৭ জনের, কয়রায় আক্রান্ত ৮৮ জন মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
খুলনায় চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ:আক্রান্ত ৮১, মৃত্যু ৬
Leave a comment