জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনা সরকারি গণগ্রন্থাগার চত্বরে অনুষ্ঠিত একুশে বই মেলায় গত ছয় দিনে ৭৫ স্টলে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। বই বিক্রেতারা এ বিক্রয়ে খুশী নয়। তারা বলছেন প্রচার করা হলে বিক্রয়ের মাত্রা বেড়ে যেত। তারা দাবী করেন গেল ২০২৩ সালে একুশে বই মেলায় বিক্রির পরিমাণ ছিল সন্তোষজনক। এবারের মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশী তবে ক্রেতার সংখ্যা কম। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বইমেলা চত্বরে যেয়ে বিভিন্ন স্টল মালিকের সাথে কথা বলে এসব সথ্য জানা যায়।
বইমেলা চত্বরে প্রবেশ করেই কথা হয় খুলনা বুক ডিপোর খন্দকার শায়েক হোসেনের সাথে। তিনি বলেন গত পহেলা ফেব্রুয়ারী থেকে বই মেলা শুরু হয়। এপর্যন্ত তার বিক্রি হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টাকার বই। আসফিয়া লাইব্রেরীর বিক্রেতা জানান, তার ৬দিনে প্রায় ৫০ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে। আলফা বুক হাউসের বিক্রেতা মনোজ কুমার দে বলেন, এবারের বই মেলায়ও তার ভালো বিক্রি হচ্ছে। তার স্টলে বিভিন্ন লেখকের কিছু ব্যতিক্রমধর্মী বই রয়েছে। গত ৬ দিনে তার প্রায় লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। মেসার্স বুক পয়েন্টের বিক্রেতা আল আমিন বলেন, গত ছয় দিনে তাদের মাত্র ৫০ হাজার টাকার মত বই বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এবারের বই মেলা ভালো জমেনি। তাছাড়া বই কেনার প্রতি পাঠকদের তেমন কোন আগ্রহ নেই। তারা বইয়ের চেয়ে মোবইল নিয়ে বসে থাকতে ভালোবাসে। ইছামতি প্রকাশনীর শামীম আহমেদ বলেন, তিনি ছয়দিনে মাত্র ৪৫ হাজার টাকার বই বিক্রি করতে পেরেছেন। কমার্স বুক ডিপো স্টলের বই বিক্রেতা বলেন, তাদের বিক্রি মোটামুটি ভালো হয়েছে। এপর্যন্ত তিনি প্রায় ৯০ হাজার টাকার বই বিক্রি করতে পেরেছেন। জাহাঙ্গীর লাই ব্রেরীর স্বত্বাধিকারী আফরোজা যূঁথী বলেন, মেলার শুরু থেকে এপর্যন্ত তার প্রায় ৬০ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে। তবে প্রচার বাড়লে আগামী দিন গুলোতে বিক্রিও বাড়বে। সাহিত্য নিকতনের বই বিক্রেতা বলেন, ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়লে বিক্রিও বাড়ে। তবে ক্রেতার চেয়ে মেলায় দর্শক বেশী।
বইমেলা মঞ্চে মঙ্গলবারের আয়োজনে ছিল, ‘সম্মিলিত রাইটার্স ফোরাম’ এর কবি লেখক ও বাচিক শিল্পীদের সাহিত্য আড্ডা ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান। পরে ‘ছায়াবৃত্ত’ আবৃত্তি অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিবশন করেন ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী’ ও ‘সুর ঝংকার’ এর শিল্পী বৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন, এসএম শাহারুজ্জামান ও ফাহমিদা নাহিন ঐন্দ্রিলা।
সার্বিক বিষয় নিয়ে খুলনা বিভাগীয় সরকারি গনগ্রন্থাগারের উপপরিচালক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান বলেন, মেলায় ছুটির দিনে ক্রেতা এবং দর্শকদের প্রচুর ভিড় হয়। এদিনে যথেষ্ট বই কিক্রি হয়ে থাকে। মেলা সম্পর্কে প্রচারের জন্য বই মালিক সমিতিকে বলা হয়েছে। তারা প্রচারের কাজটা করবেন। তিনি বলেন, মানুষের বইয়ের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ নেই। বই পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারলে বিক্রিও বাড়বে।