জন্মভূমি রিপোর্ট : ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর খুলনা জেলায় অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। চিংড়িঘের দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, খুন, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়েছে। নগরী থেকে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত মাদকের ছড়াছড়ি। জনগণের নিরাপত্তার জন্য ভুক্তভোগীরা থানায় আশ্রয় নিচ্ছে। জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
এ কমিটির সূত্র মতে, আগস্ট মাসে জেলার কয়রা, পাইকগাছা, ফুলতলা, ডুমুরিয়ায় ছয়টি খুন ও মহানগরী এলাকার লবণচরায় একটি খুনের ঘটনা ঘটে। অপরদিকে বটিয়াঘাটা, তেরোখাদা, ফুলতলায় সব মিলিয়ে চারটি ধর্ষণ ও নগরীতে তিনটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। বটিয়াঘাটা, তেরখাদা, দিঘলিয়ায় ২টি, রূপসায় ২টি, ও তেরখাদা খোদায় ১টি, খুলনা নগরীতে ৯টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে আগস্ট মাসে জেলায় ৫৮টি ও নগরীতে ৪৮টি অপরাধ রেকর্ড করা হয়।
সেপ্টেম্বর মাসে রুপসা, দিঘলিয়া, ফুলতলা ও দাকোপে ১টি করে ও নগরীতে ১টি খুনের ঘটনা ঘটে।
সেপ্টেম্বরে পাইকগাছাতে ২টি, ফুলতলায় ১টি, ডুমুরিয়ায় ২টি ধর্ষণের ঘটনা ও নগরীতে ৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এছাড়া সেপ্টেম্বর মাসে কয়রায় ১টি, ডুমুরিয়ায় ২টি, দিঘলিয়ায় ১টি, বটিয়াঘাটা ১টি ও নগরীতে ২২টি শিশু ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে জেলায় ৬৯টি এবং নগরীতে ৬৮টি নানা ধরনের অপরাধ এর চিত্র উঠে এসেছে।
সূত্র জানায়, অক্টোবর মাসে জেলার, রুপসা, বটিয়াঘাটা, দিঘলিয়া, ফুলতলা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছায় ১৬টি চুরি ও নগরীতেও ১৬ চুরির ঘটনা ঘটে। কয়রায় ১টি, ডুমুরিয়ায় ১টি, পাইকগাছা ১টি খুনের ঘটনা ঘটে এবং নগরীতে ২টি খুন হয়। এ মাসে জেলায় ৪টি ধর্ষণ ও নগরীতে ৭টি ধর্ষণসহ জেলায় ১০টি ও নগরীতে ১৭টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে এ মাসে জেলায় সর্বমোট ৩৭টি ও নগরীতে ৫২টি নানা ধরণের অপরাধ সংগঠিত হয়।
কে এমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু রায়হান মুহাম্মাদ সালেহ আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উল্লেখ করেন, আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে নগরীতে অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ সব সময় সতর্ক অবস্থানে আছে। নগরীতে চুরি, ডাকাতি, মাদক, ধর্ষন এবং অপহরণ সহ অন্যান্য অপরাধ
হ্রাস করতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
খুলনার পুলিশ সুপার টি, এম মোশাররফ হোসেন জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উল্লেখ করেন, আগস্ট সেপ্টেম্বরে অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বরে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উল্লেখ করেন ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, যৌন হয়রানি, মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন সহ অন্যান্য অপরাধ দমনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শিশু পাচার, খুন, অপহরণ ও নারী নির্যাতনের মত জঘন্য অপরাধসমূহ তদন্তপূর্বক দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।