জন্মভূমি ডেস্ক : জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার উত্থাপন করা প্রস্তাবটিতে অবিলম্বে মানবিক অস্ত্রবিরতি কার্যকর করা, ত্রাণের সুবিধা বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের বাধ্যতামূলকভাবে গৃহচ্যূতের বিষয়টি প্রত্যখ্যান করা হয়।
আলজেরিয়ার খসড়া প্রস্তাব সম্পর্কে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা টমাস-গ্রীনিফিল্ড বলেন, পণবন্দিদের মুক্ত করার ব্যাপারে হামাসের সঙ্গে অবশ্য করনীয় কোন সমঝোতা ছাড়া অবিলম্বে নি:শর্ত অস্ত্রবিরতির দাবি টেকসই শান্তি আনতে পারবে না।
টমাস-গ্রীনফিল্ড আরও বলেন, এতে বরং হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার লড়াই আরও বাড়তে পারে, পণবন্দিদের আটক থাকার মেয়াদ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। গাজায় ফিলিস্তিনিরা যে মারাত্মক মানবিক সংকটে আছে তার সময়কালও বৃদ্ধি পেতে পারে।
আলজেরিয়া তিন সপ্তাহ আগে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদে তার খসড়া প্রস্তাবটি পেশ করে তবে আলোচনায় সময় দেয়ার জন্য এ ব্যাপারে ভোট গ্রহণ বিলম্বিত করে। তবে সে দেশের রাষ্ট্রদূত আমার বেন্দজামা বলেন নীরবতা আর কোন বিকল্প নয়, নিরাপত্তা পরিষদের ব্যবস্থা নেয়ার সময় এখনই।
১৫ লাখ ফিলিস্তিনি যেখানে আশ্রয় নিয়ে আছে দক্ষিণাঞ্চলের সেই রাফাহ শহরে ইসরায়েলের আসন্ন আক্রমণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা দ্রুতই একটা বিপজ্জনক সন্ধিক্ষণের দিকে যাচ্ছি যেখানে সহিংসতার যন্ত্র বন্ধ করার আহ্বান তার তাৎপর্য হারাব।
তিনি আরও বলেন, আজ প্রতিটি ফিলিস্তিনি হচ্ছে মৃত্যুর, নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার এবং গণহত্যার লক্ষ্যবস্তু। আমাদের নিজেদের জিজ্ঞেস করা উচিৎ এই পরিষদ অস্ত্র বিরতির আহ্বান জানানো দরকার মনে করার আগে আর কত নিরপরাধ জীবন বিসর্জিত হবে?
আলজেরিয়ার ওই খসড়ার প্রতি পরিষদের জোরালো সমর্থন ছিল– ১৩ টি সদস্য রাষ্ট্র এর পক্ষে ভোট দেয়, ব্রিটেন ভোটদানে বিরত ছিল এবং যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রদান করে। এ নিয়ে তৃতীয়বার অস্ত্রবিরতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিল।
ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর বলেন, অনেক আগেই অস্ত্র বিরতি প্রস্তাবে সহমত প্রকাশ করা উচিৎ ছিল। নতুন করে আর কত নরক পার হতে হবে, যাতে এই পরিষদ শেষ পর্যন্ত অস্ত্র বিরতির দাবি জানাতে পারবে।
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তার নিজের খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করছে। বহু কুটনীতিকই বলছেন যে প্রস্তাবটি এখনও নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার করা হয়নি।