গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জে সাবেক সেনা সদস্য হত্যাকান্ডের মূলহোতা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নওশের আলী এবং তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন এবং বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসি ও স্বজনরা।
সোমবার সকালে কাশিয়ানী উপজেলার ফসলী বাজারে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে নিহত সেনা সদস্যের স্ত্রী শরীফা বেগম অভিযোগ করে বলেন, নিজামকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী নওশের আলী ও তার সহযোগীরা আমার স্বামী সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট চৌধুরী রফিকুল ইসলাম ওরফে আনসার চৌধুরীকে প্রকাশ্য কুপিয়ে হত্যা করে। ইতোমধ্যে তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও হত্যাকান্ডের মূলহোতা নিজামকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী নওশেরে আলীকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।অপরদিকে, হত্যাকারীরা এলাকার নীরহ মানুষ ও নিহতের আত্মীয় স্বজনদের নামে ভাংচুর ও লূটপাটের মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। অবিলম্বে আমি আমার স্বামী হত্যাকান্ডের মূলহোতা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নওশের আলীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার পাশপাশি এলাকার নীরিহ মানুষ ও নিহতের স্বজনদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ হয়রানী বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নিজামকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান বিপ্লব বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নওশের আলী এলাকায় খুনের রাজত্ব কায়েম করেছেন। গত দুই দশকে নিজামকান্দি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ মদদে এপর্যন্ত ১৪টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।এরআগে ১০-১২ বছর আগে নিহত সেনা সদস্যের ছোট ভাই জাফর চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। তিনি আরও বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান কেবল সেনা সদস্যকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হননি।এলাকার আধিপত্য বজায় রাখতে তিনি নীরিহ মানুষ ও নিহতের স্বজনদের বিরুদ্ধে ভাংচুর ও লুটপাটের মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।অথচ হত্যাকান্ডের পর এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। আমরা শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসী ইউপি সেনা সদস্য হত্যায় জড়িত ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নওশের আলীর গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবী করছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাশিয়ানী থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ জসীম উদ্দিন বলেন, এ পর্যন্ত ১১ জন আসামী গ্রেপ্তার হয়েছে।এরমধ্যে দুই আসামীকে রিমান্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।অপর আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।হত্যাকান্ডের পর থেকে এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে, সাবেক সেনা সদস্য হত্যাকান্ডের মূলহোতা নিজামকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নওশের আলীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। গ্রেপ্তার এড়াতে হত্যাকান্ডের পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানাগেছে।
এরআগে ফলসী বাজারে সেনা সদস্য হত্যার বিচার, আসামীদের গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে নীরিহ মানুষদের হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী।এসময় দাবী সপক্ষে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
প্রসঙ্গত,গত ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে জেলার কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দিতে প্রতিপক্ষের লোকজন সাবেক সেনা সদস্য চৌধুরী রফিকুল ইসলাম ওরফে আনসার চৌধুরীকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওইদিন ৭৮ জন এবং অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০জনকে আসামী করে নিহতের স্ত্রী শরীফা বেগম বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৩১/২০২৩) মামলা দাযের করেন।
গোপালগঞ্জে সাবেক সেনা সদস্য হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ
Leave a comment