বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ শুক্রবার দেশের উপকূলে আঘাত হেনেছে। এতে সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে। উপকূলীয় কোনো কোনো স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে; নষ্ট হয়েছে জমির ফসল ও শাকসবজি।
এছাড়া মিধিলির প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে দিনভর বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে দেশে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন; অনেকের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল।
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা যথাযথভাবে নির্ধারণে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। মিধিলির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে যেসব হতদরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, জমির ফসল নষ্ট হয়েছে, তারা পথে বসতে বাধ্য হবেন। যারা আশ্রয় হারিয়েছেন, তাদের ঘরবাড়ি নির্মাণে অবিলম্বে সহায়তা করা প্রয়োজন। যাদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তাদের সেই ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে তাদের জন্য সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও মাত্রা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে আগাম ব্যবস্থা, সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ বা বন্ধ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে পূর্বপ্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা সম্ভব। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার বিষয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই বর্তমানে বহু মানুষের কষ্ট বেড়েছে। এসব মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হলে তাদের দুর্ভোগ কতটা বাড়বে তা সহজেই অনুমেয়। কাজেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর প্রশাসনের পাশাপাশি এনজিওগুলোও মানুষের পাশে দাঁড়াবে, এটিই কাম্য।