শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা বিভাগে হু-হু করে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। শনাক্তের সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। গ্রাম-গঞ্জের সর্বত্রই এখন ডেঙ্গু আতংক। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে তিল ধাারণের ঠাঁই নেই। হাসপাতালের বারান্দা থেকে শুরু করে বাথরুমের পাশেও পড়ে রয়েছেন রোগীরা। রোগী আর স্বজনদের পদভারে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক সেবিকাদের। বিভাগের মধ্যে আক্রান্তের দিক থেকে খুলনা রয়েছে শীর্ষে। চলতি মাসে বিভাগের দশ জেলা ও দুই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ২০৭ জনের দেহে। এসময়ে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। শুধু খুলনা জেলাতেই চলতি মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫০১ জন। আর এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।
বিভাগে গত জুলাই মাসের চেয়ে আগস্ট মাসে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। জুলাই মাসে আক্রান্ত হয় মোট ১ হাজার ৩১৫ জন। আর মৃত্যু হয় ৬ জনের। চলতি আগস্ট মাসে শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ২০৭ জনের দেহে। এ মাসে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। আগষ্টে শুধুমাত্র খুলনা জেলায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫০১ জন আর মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। অথচ জুলাই মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৯৫ জন। এসময়ে মৃত্যু হয় ২ জনের।
জুলাই মাসে বিভাগের বাগেরহাট জেলায় শনাক্ত হয় ১০১ জন, আগষ্টে হয় ৩৭৯ জন, সাতক্ষীরায় জুলাই মাসে ৪৩ জন, আগষ্টে ১১৬ জন, যশোর জুলাই মাসে ২৩৩ জন, আগষ্টে হয় ৬৮১ জন, ঝিনাইদহ জুলাই মাসে ৯৬, আগষ্টে ৩৮৯ জন, মাগুরা জুলাই মাসে ছিল ২৪২ আগষ্টে ৮৫২ জন, নড়াইল জুলাই মাসে ১৪৩ জন, আগষ্টে ৩৭৪ জন, কুষ্টিয়া জুলাই মাসে হয় ১২৯ জনের আর আগষ্টে আক্রান্ত হয় ৩৬৯ জনের, চুয়াডাঙ্গায় জুলাই মাসে ২০ জন আগষ্টে ৭৯ জন, মেহেরপুর জুলাই মাসে ৮৫, আগষ্টে ২৪৭ জন, সাতক্ষীরা মেডিকেলে জুলাই মাসে ছিল ৭২ জন সেই সংখ্যা আগষ্টে হয় ৯৭ জন, খুলনা মেডিকেলে জুলাই মাসে শনাক্ত হয় ২৪৯ জন আর আগস্ট মাসে হয় ৪৭৮ জন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: সুহাস রঞ্জন সাহা বলেন, জুলাই মাসের তুলনায় খুলনা মেডিকেলে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশী বেড়েছে। মৃত্যুও হয়েছে দ্বিগুণ। তিনি বলেন আগামী সেপ্টেম্বর মাসে যদি বৃষ্টির পরিমাণ এবং জলাবদ্ধতা কমে আসে তাহলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও কমে আসবে। খুলনা মেডিকেলে বাইরের থেকে যেমন রোগী আসছে, তেমনি খুলনা নগরীসহ আশপাশের জেলা ও গ্রাম-গঞ্জ থেকেও রোগী আসছে।
খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা: মনজুরুল মুরশিদ বলেন, বিভাগের মধ্যে খুলনা, যশোর এবং মাগুরা জেলায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে ডেঙ্গু শনাক্তের সংখ্যা কমে আসবে। তবে সে সময় পর্যন্ত মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। তানাহলে সেপ্টেম্বর মাসেও এ সংখ্যা কমবে বলে মনে হয় না।