ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট গত রোববার থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই বিভিন্ন শপিংমল ও বিপণিবিতান খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। তবে সতর্কতার সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনা করতে বলা হয়েছে। এরপর কি শঙ্কা থাকবে না? করোনার এমন ঊর্ধ্বমুখীতে দোকানপাট খুলে দেয়ার পর জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হলে অফিস-আদালত, গণপরিবহন এবং দোকানপাট ও শপিংমল মল বন্ধ করে দেয়া হয়। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা সরকারি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে শিল্প-কারখানা ও ব্যাংক খোলা রাখা হয়। লকডাউন কিংবা কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দেশে সংক্রমণ কমেছে। বিধিনিষেধ জারির আগে ও পরের চিত্র পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। করোনা সংক্রমণের পর থেকে রোগতাত্তি¡ক পর্যালোচনা করে আসছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এক সপ্তাহ ধরে রোগটির কোন সূচকে কী পরিবর্তন হয়, তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে। সেখানে করোনা সংক্রমণ কমার তথ্য উঠে এসেছে। এমতাবস্থায় লকডাউন আরো কিছুদিন বাড়ানোর বিষয়টি ভাবা যেতে পারে। কঠোরভাবে লকডাউন অবশ্যই বিজ্ঞানসম্মত হতে হবে। কিছু খোলা রেখে আবার কিছু বন্ধ রেখে লকডাউন হয় না। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট বাজার বা সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে শপিংমলগুলোয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটা সম্ভব হবে কিনা প্রশ্ন রয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট চালু রাখার কারণে সড়কে মানুষের চলাচল বেড়ে যাবে। করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণের সময়ে এসে এমন সিদ্ধান্ত কেনÑ তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, মানুষ শপিংমলে যাবে কীভাবে? এ অবস্থায় গণপরিবহন চালুর দাবিও উঠেছে। আর ওই দাবির মুখে গণপরিবহন চালু করা হলে সড়কে আগের মতো যানজট পড়বে, সামাজিক দূরত্বও থাকবে না। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধিও মানা কঠিন হয়ে পড়বে। দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় ব্যবসায়ীরা খুশি হয়েছেন। সরকারের সিদ্ধান্তে মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে সরকারের দেয়া শর্ত বা নির্দেশনা মেনেই দোকানপাট-শপিংমল খোলা রাখতে হবে। কোনো ধরনের অনিয়ম করা যাবে না। সরকার যেমন দেশের জনগণের কথা চিন্তা করছে, ঠিক তেমনি ব্যবসায়ীদের সরকারের নির্দেশনাও মেনে চলতে হবে।