# জোয়ারের পানিতে ভাসছে বরগুনা
জন্মভূমি ডেস্ক
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাব আর পূর্ণিমার ভরা কোটালের প্রভাবে তিন ফুটের বেশি উ”চতার জলো”ছ¡াসে সুন্দরবন ও উপক‚লীয় এলাকা ডুবে গেছে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুরে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয় পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রসহ পুরো বনাঞ্চল। অপর দিকে জোয়ারের পানিতে ভাসছে বরগুনার নি¤œাঞ্চল।
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার আড়াই ফুট উ”চতার জলো”ছ¡াসে সুন্দরবন প্লাবিত হয়। শুক্রবার তিন ফুটের অধিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে পুরো সুন্দরবন। এতে করমজলের রাস্তাঘাটসহ বনাঞ্চলে পানি থৈ থৈ করছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রজনন কেন্দ্রের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, শুক্রবার মোংলা বন্দরে তিন নম্বর ¯’ানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। ফলে শুক্রবারও স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় অধিক উ”চতার জ্বলো”ছাসে প্লাবিত হয়েছে মোংলার নি¤œাঞ্চলসহ সুন্দরবন উপক‚ল।
তিনি আরও বলেন, ¯’ল নি¤œচাপটি ভারতের মধ্যদেশে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। ফলে শনিবার থেকে স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করবে।
\ জোয়ারের পানিতে ভাসছে বরগুনার নি¤œাঞ্চল \
বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হ”েছ বরগুনার সবগুলো নদীর পানি। শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত পায়রা ও বিষখালীর পানি বিপৎসীমার ৩ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হ”েছ।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মাহতাব হোসেন জানান, গত তিনদিন ধরে নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ছে। এতে করে উপক‚লীয় এলাকা প্লাবিত হ”েছ।
জোয়ারের পানির চাপ বাড়ায় তলিয়ে গেছে বরগুনার বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরিঘাট। এতে সকাল থেকে ফেরিতে যানবাহন ওঠা বন্ধ হয়ে পড়ে। এ রুট হয়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় বরগুনার সাথে পাথরঘাটা, বামনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুরসহ খুলনার সঙ্গে। ফেরিতে উঠতে সাধারণ যাত্রীদের খেয়া পার হতেও দেখা গেছে। এতে সকাল থেকেই ফেরিঘাটে ভোগান্তি পোহা”েছন হাজারো মানুষ।
পাথরঘাটায় যাওয়ার জন্য আসা অটোচালক সুলতান জানান, বরগুনা থেকে বিভিন্ন মুদি সামগ্রী নিয়ে পাথরঘাটা যাওয়ার জন্য রওনা হই। ঘাট তলিয়ে থাকায় বড় চাকার যানবাহন ফেরিতে উঠতে পারলেও তিনি আটকে আছেন। মুদির সামগ্রী পাথরঘাটায় কখন পৌঁছাতে পারবেন শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
এদিকে তিনদিনেও জোয়ারের পানির চাপ না কমায় চর ধুপুতি, বড়ইতলা-বাইনচটকি, কুমড়াখালী, বাদুরতলাসহ বিভিন্ন ¯’ানে প্লাবিত হয়ে বসতঘর, রাস্তাঘাটসহ সবকিছু। দিনের পর দিন একই অব¯’া চলতে থাকায় বিপাকে পড়েছেন মানুষ। ঘরে থাকা শুকনো খাবারও শেষের পথে।
বড়ইতাল ফেরি ঘাট সংলগ্ন ইউনুস শিকদার জানান, তিনদিন ধরে প্লাবিত হলেও জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ নেয়নি তাদের। কোনো সহায়তাতো দূরে থাক এক প্যাকেট চিড়া বা মুড়ি নিয়েও কেই আসেননি।
এ বিষয়ে ঢলুয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল হক স্বপন জানান, জোয়ারে প্লাবিত হওয়া নিত্যদিনের বিষয় এসব এলাকার জন্য। তবে বর্তমানে পানির উ”চতা বাড়ায় এ সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করছে। প্রায় সময়ই এমন ঘটনা লেগেই থাকেই। তবে এ সময় সহায়তার জন্য কোন বরাদ্দ পায় না তারা। তাই ই”েছ থাকলেও সহায়তা করতে পারেন না।
\ বঙ্গোপসাগরে আরেকটি লঘুচাপের আভাস \
এবার উত্তর বঙ্গোপসাগরে আরেকটি লঘুচাপের আভাস দেখা দিয়েছে। বর্তমান একটি দুর্বল লঘুচাপ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অব¯’ান করছে, যা একদিন আগেও নি¤œচাপে রূপ নিয়েছিল। এখনও এটির প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার রাতে আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অ¯’ায়ীভাবে ধমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আগামী দু’দিনে আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হবে। বর্ধিত পাঁচ দিনে উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে।
সমুদ্রবন্দর ও উপক‚লেও ঝড় বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই দেশের সব সমুদ্রবন্দরসমূকে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।