পাইকগাছা অফিস
উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়মিত খেলার পাশাপাশি বর্তমানে ঢাকা প্রমিলা কুমিল্লা ইউনাইটেড বি লীগের হয়ে নাম লিখিয়েছে তারিমা। ২০০৬ সালের ১ অক্টোবর পাইকগাছা উপজেলার লস্কর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করে তারিমা। পিতা মাসুম মোল্লা ও মাতা রেহানা বিবি। ৩ বোনের মধ্যে তারিমা দ্বিতীয়। পিতা একজন দিন মুজুর। মা গৃহিণী। তারিমা বর্তমানে লস্কর কড়ুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ফুটবলের প্রতি তারিমা’র আগ্রহ তৈরী হয়।
স্বপ্ন দেখে একদিন সে দেশের হয়ে প্রমিলা জাতীয় ফুটবলে লড়াই করবে। চরম দারিদ্রতায় তার স্বপ্ন যতবার হার মেনেছে। বারংবার তাঁর প্রবল ইচ্ছা শক্তি ও কঠোর পরিশ্রমের কাছে কোন কিছুই আটকাতে পারেনি তাঁর স্বপ্ন।
শেষমেষ ২০১৬ সালে তার পাশে এসে দাড়ায় এএফসি বাফুফে সি লাইসেন্স কোচ ও দেবাশীষ ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা দেবাশীষ সানা। এএফসি বাফুফে ওয়ান স্টার অনুমোদিত দেবাশীষ ফুটবল একাডেমিতে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ নিয়ে তারিমা এখন তার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন জয়ের স্বপ্ন দেখছে। তারিমা ২০১৯-২০ সালে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়োমিত খেলে। এরপর ২০২০ সালে সে বিকেএসপি’তে খেলার সুযোগ পায়। বর্তমানে সে কুমিল্লা ইউনাইটেড প্রমিলা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে খেলার সুযোগ পেয়েছে। এ ব্যাপারে কৃতি ফুটবলার তারিমা বলেন, ছোট বেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি আমার দুর্বলতা। পাড়ায় ছেলেদের সাথে আমিও ফুটবল খেলতাম। মেয়ে হয়ে খেলতাম বলে অনেকে হাসাহাসি করত। কিন্তু আমি সব তোয়াক্কা করতাম না। আমার মাথায় কাজ করতো ছেলেরা পারলে আমি পারবো না কেন? সরকার স্কুলেও ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও ফুটবল টুর্নামেন্ট করায় আরো ইচ্ছাশক্তি বেড়ে গেল। মা-বাবা সহ সকলের দোয়ায় এখন আমি এলাকার বাইরে খেলছি। একটাই স্বপ্ন জাতীয় দলের হয়ে খেলবো। ফুটবলে তার এ সাফল্যের জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তারিমা। বিশেষ করে দেবাশীষ ফুটবল একাডেমীকে। দেবাশীষ ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা দেবাশীষ সানা জানান, তারিমার প্রতিভা দেখে আমি মুগ্ধ। তাকে দেবাশীষ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরামর্শ দেই। অস্বচ্ছলতার জন্য সকল সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।
দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণ শেষে তারিমা এখন অনেক সম্ভাবনাময় একজন স্টাইকার কৃতি ফুটবলার। আগামীতে জাতীয় দলের হয়ে খেলবে এমন সম্ভাবনা তার মধ্যে রয়েছে। আশা করছি একদিন তারিমা দেশের খ্যাতিমান কৃতি প্রমিলা ফুটবলের তালিকায় স্থান করে নিবে। দেশের সুনাম কুড়াবে।