জন্মভূমি ডেস্ক : সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ওপর নজর রাখছে একটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। বাংলাদেশি জাহাজকে সহায়তা করতে কাছাকাছি এলাকায় ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি একটি দূরপাল্লার সামুদ্রিক টহল উড়োজাহাজও অবস্থান নিয়েছে। শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে এক্সের একটি পোস্টে এ কথা জানিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী।
পোস্টে বলা হয়েছে, সশস্ত্র জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ক্রুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ কাছাকাছি এলাকায় উপস্থিত আছে। খবর পেয়ে গত মঙ্গলবারই নৌবাহিনী দূরপালার মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্র্যাফ্ট এলআরএমপি পি-৮১ মোতায়েন করে। এয়ারক্র্যাফ্টটি জাহাজের ক্রুদের অবস্থা জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করে। তবে জাহাজ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘পরে ভারতীয় নৌবাহিনী একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে। সেটি ওই অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তায় কাজ করছে। যুদ্ধজাহাজটি বৃহস্পতিবার জিম্মি জাহাজটিকে নজরদারি করতে শুরু করে।’
নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, সশস্ত্র জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাণিজ্যিক জাহাজের ক্রুদের (বাংলাদেশি নাগরিক) নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাহাজটি সোমালিয়ার জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ এর কাছাকাছি অবস্থানেই ছিল।
পশ্চিম ভারত মহাসাগরে বেশ কিছু বাণিজ্য জাহাজের ওপর হামলার পর ভারতীয় নৌবাহিনী গত কয়েক সপ্তাহে ওই অঞ্চলে নজরদারি বাড়িয়েছে।
জিম্মি জাহাজটির অবস্থান পরির্বতন করছে দস্যুরা : ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদর কবলে পড়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুলাহকে নতুন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে জলদস্যুরা। বৃহস্পতিবার সোমালিয়া উপকূল থেকে ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করেছিল জাহাজটি। শুক্রবার বিকেলে জাহাজটির নোঙর তুলে অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে তারা। অন্যদিকে, ভারতীয় নেভির একটি জাহাজ জিম্মি এমভি আবদুলাহকে অনুসরণ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
জাহাজটির মালিকপক্ষের মুখপাত্র ও কেএসআরএম গ্র“পের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার জাহাজটি উপকূল থেকে ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করেছিল তারা। এরপর দস্যুদের আরেকটি দল জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাহাজটি আবার অবস্থান পাল্টাতে থাকে। জাহাজটি কেন হঠাৎ করে অবস্থান পাল্টাচ্ছে তা আমাদের জানা নেই। তবে জলদস্যুদের কেউ আমাদের সঙ্গে এখনও মুক্তিপণের ব্যাপারে যোগাযোগ করেনি। তবে নাবিকেরা সবাই ভালো আছেন। সুস্থ আছেন।’
প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এস আর শিপিংয়ের ১৩ মিটার গভীরতার জাহাজ এমভি আবদুলাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে। জাহাজের ২৩ নাবিককে স্পিডবোটে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন একজন।
এমভি আবদুলাহ জাহাজে থাকা নাবিকদের মধ্যে চট্টগ্রামের বাসিন্দা আছেন ১১ জন। বাকিরা ফেনী, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার। আক্রান্ত নাবিকদের সবাই সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন এসআর শিপিংয়ের কর্মকর্তারা।