# শিশুদের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট
# অপমানের ভয়ে চাকুরি ছাড়ছেন আতঙ্কিত শিক্ষকরা
এম সাইফুল ইসলাম
“অনিয়মে চলছে খুলনার ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্প” শিরোনামে দৈনিক জন্মভ‚মিতে গত রবিবারে সংবাদ প্রকাশের পরে নড়েচড়ে বসে কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এনজিও কর্মকর্তারা।
সংবাদ প্রকাশের একদিন পরেই মঙ্গলবার দুপুরে শিশুদের নির্ধারিত নম্বরে টাকা ঢুকে যায়। তবে এখানেও অনিয়ম। প্রকল্প শুরু হওয়ার একমাস পরেই অধিকাংশ শিশুদের বিভিন্ন অজুহাতে বাদ দিয়ে দেয়া হলেও কাগজে কলমে তাদের নাম থেকে যায়। তাদের নামে ব্যবহার করা হয় ভুয়া বিকাশ নম্বর।
নগরীর ৩১নং ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার্থী রানা এ প্রতিবেদককে জানান, আমার বাবা দিনমজুর, তাকে আমার সহযোগিতা করতে হয়। এ অজুহাতে ম্যাডাম আমাকে কেন্দ্রে আসতে নিষেধ করে। তবে আমি কোন মাসেই টাকা পাইনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তার মতো অনেকেরই টাকা কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি পিওন ও কেন্দ্র শিক্ষকদের বিকাশ নম্বরের টাকা ঢুকেছে। এছাড়া সংবাদ প্রকাশের পরে তথ্য ফাসের দায়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দিলে আতঙ্কে পড়ে শিক্ষকরা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, অপমান বা হুমকির ঘটনা কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনে নতুন নয়। তিনি আরও জানান, এ প্রকল্প শুরু হওয়ার প্রথম মাসে অপমান নিতে না পেরে পদত্যাগ করে নগরীরর তেতুলতলা মোড়ের কেন্দ্র শিক্ষক।
বিশ^স্ত সূত্রে জানা যায়, শুধু তেঁতুলতলা মোড় নয়, চাপ নিতে না পেরে ব্যাক্তিগত সমস্যার কথা বলে প্রকল্প শুরুর পরের মাসেই পদত্যাগ করে ক্যাথরিনা বিশ^াস। তবে তিনি পদত্যাগ করে এ প্রকল্পের সহযোগী অন্য এনজিওতে যোগদান করে কেন্দ্র পরিচালনা করছেন। এরপরে ৩৫ ও ৩৬ নম্বর কেন্দ্র থেকে পদত্যাগ করেন সানজিদা ইয়াসমিন। তার অব্যাহতি পত্রে উল্লেখ করা হয় তিনি ৩৫ ও ৩৬ দু’কেন্দ্রের শিক্ষক। অথচ তিনি বেতন পেতেন এক কেন্দ্রের। এখনও তার বেতন বাকি রয়েছে। এ নিয়ে সানজিদার ইয়াসমিনের কাছে জানতে চাইলে মুখ খুলতে চাননি তিনি।
জানা যায়, নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ৯টি বেসরকারি সংস্থার ৩৭৬টি কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে সাত হাজার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রকল্পে প্রথম ছয় মাস উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা দিবেন। পরের চার মাস দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরমধ্যে প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর তারা ঝুঁকিবিহীন কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, অনিয়মের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, আমরা তদারকি করছি। এক্ষেত্রে অনেক তথ্যই আমাদের কাছে আছে। এর বাইরে যদি আরও তথ্য পাওয়া যায়, তাও গুরুত্ব দেয়া হবে।
ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের শিশুদের একাউন্টে টাকা
Leave a comment