শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া : ডুমুরিয়া (খুলনা) সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে খুলনার ডুমুরিয়ার বিভিন্ন রোডের আম গাছে। দৃশ্যটি যে কাউকেই কাছে টানবে। প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগে ভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে খুলনা শহর থেকে শুরু করে গ্রামের আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা ভালো ফলনের স্বপ্ন বুনছেন। কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি। এছাড়া শহরের বাইরে ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, রূপসা, কয়রা, ফুলতলা, তেরখাদা, দিঘলিয়া উপজেলায় গাছে গাছে মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে আমের বাগান। গাছে মুকুলের সঙ্গে গুটি আমের দেখাও মিলছে। বাগান মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ডুমুরিয়া উপজেলার আঙ্গাদহ গ্রামের আম বাগানের মালিক দরবেশ আমাদের ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি শেখ মাহতাব হোসেন কে বলেন, বাগানের অধিকাংশ গাছ-ই এরই মধ্যে মুকুলে ছেয়ে গেছে। এবার কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে।
ডুমুরিয়ারগুটুদিয়া গ্রামের আম চাষিআব্দুর রহমান বলেন, আম বাগানে এবার আগে ভাগে মুকুল এসেছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খুলনায় গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
তারা বলছেন, প্রাকৃতিক কারণেই এবার আগেভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে। পরিচর্যা আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে আমের উৎপাদন বাড়ছে। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, আমের মুকুল আসার আগে-পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সস্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, উপজেলার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। ডুমুরিয়া আম চাষীদের অর্জন ভালো। ২০২৩ সালে তিন দিনব্যাপি জাতীয় ফল প্রদর্শনীতে ব্যক্তি পর্যায়ে ডুমুরিয়া আম চাষে সফলতা পেয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ওয়ালিদ হোসেন বলেন, উপজেলার প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
জেলার অন্যান্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।