শেখ মাহাতাব হোসেন, ডুমুরিয়া : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ফলের রাজাগুলোতে চলছে লাগামহীন ফলের বাজার। সক্রিয় হয়ে উঠেছে খুচরা ফল বিক্রেতা সিন্ডিকেট। পাইকারি আড়ত থেকে কম মূল্যে ফল কিনলেও খুচরা পর্যায়ে প্রায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি করছে।
তদারকি না থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।এতে পরিবারের জন্য যারা জজনিল কিনতেন, তারা বাজারের তালিকা থেকে পুষ্টিকর এ পণ্যটি বাদ দিচ্ছেন। এছাড়া খুব প্রয়োজনে খরচ সমন্বয় করতে একটি-দুটি করে ফল ওজন দিয়ে কিনছেন। দেশীয় ফলেও নেই স্বস্তি। মোটকথা মধ্যবিত্ত এবং গরিবেরা যেন ফল ধরতেই মানা।
অনেকেই খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন, আবার অনেকেই প্রয়োজনে সীমিত পরিমাণে কিনে খাচ্ছেন। ছোট-বড় ফলের দোকানে ভালো মানের বিদেশি ফল আড়াইশো-তিনশো টাকার নিচে মিলছেনা। নামের আধিক্যতার কারণে অনেক ক্রেতাই বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা নাম শুনেই ফলের দোকানের সামনে থেকেই ঘুরে চলে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার ২৯শে আগস্ট ডুমুরিয়া ফলের বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, বাজারে এখন মানভেদে প্রতি কেজি সবুজ আপেল ২৮০-৩০০টাকা, লাল আপেল ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা, কমলা ২০০ থেকে ২২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেলি কালো ও লালচে আর ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বড় আনার ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, মাস্টার কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, আম প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০-২০০ টাকা, পেয়ার ৭০-৮০টাকা, আমড়া ৩০-৩৫টাকা, ড্রাগন ফল প্রতি কেজি ৩০০-৩৫০ টাকা, নেশপাতি প্রতি কেজি ১৮০- ২০০টাকা বিক্রি হচ্ছে।
ফল কিনতে আসা আব্দুল কাইয়ুম জানান, এক সময় দুই দিন পরিবারের অন্য ফল কিনে বাড়ি ফিরতাম। অনহনীয় দামের কারণে এখন আর কেনা হয় না। নিত্যপণ্য মূল্য সংসারের অন্যান্য খরচ বেড়েছে। তাই খুব দরকারে একটি-দুটি করে ফল নিয়ে ওজন মেপে যে টাকা হয় নেভাবে ফল কিনতে হচ্ছে। দোকানি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা আপেলের দাম চাচ্ছে। তাই দুটি আপেল কিনেছেন। এখন দুটি মাল্টা ওজন দিচ্ছি। ওজনে যে দাম হবে সেটা দিতে হবে। তিনি আরো ফলের কোনো সংকট নেই। তারপরও বিক্রেতারা বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তারা বলছে যে ফলের যে দাম। চাওয়া হচ্ছে নেই নামেই কিনতে হবে। তা না হয় যান। ফল কিনতে আসা আরেক ক্রেতা কোহিনুর বেগম জানান, আপেল কমলা কেনা বাদ দিয়েছি অনেকদিন আগেই আড়াইশো-তিনশো টাকা দিয়ে এক কেজি ফল কিনে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষজনের পোষায় না।
ফলের বাড়তি দামের কারণে একান্ত প্রয়োজন বা অতিথি আপ্যায়ন ছাড়া ফল কেনা হয়না। বাচ্চারা থেকে চাইলে দুইটা-তিনটা করে কিনে নিয়ে যাই।
বাজারের ফল বিক্রেতা আলামিন জানান, পাইকারি বাজার থেকে আমরা যে দরে ফল আনি, কিছু লাতে তা বিক্রি করি। আমাদের কোনো সিন্ডিকেট নেই। পাইকারি পর্যায় থেকে ফল আনতে কিছু হয়। এ ছাড়া বাড়তি দামের কারণেও ফলের দাম বেশি।
ডুমুরিয়ায় ফলের বাজার আগুন : সাধ থাকলেও সাধ্য নেই ক্রেতাদের
Leave a comment