শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া : খুলনার ডুমুরিয়ায় হাঁসের খামারে লাভবান হচ্ছে খামারীরা। প্রতিবছর এ উপজেলায় কয়েক লাখ হাঁস পালন করে মাংস ও পুঁষ্টির চাহিদার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে অনেকে।
এ অঞ্চলে হাঁসের মাংসের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। উক্ত চাহিদার কথা মাথায় রেখে খামারিরা প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ হাঁস উৎপাদন করে এ অঞ্চলের মানুষের হাঁসের মাংসের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খুলনা জেলা শহর সহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিক্রি করে বেকারত্বের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে তারা।
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন সাপ্তাহিক চুকনগর, কৈয়া বাজার, ডুমুরিয়ার হাট-বাজারে হাঁসের মাংস কেঁটে বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। প্রতি হাঁসের পিচ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা এবং কাঁটা হাঁসের মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫’শ থেকে ৬’শ টাকা।
এ ব্যাপারে শোভনা ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের হাঁস খামারী সুমন্ত পাল ও পিন্টু সরকার, জানান আমরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁসের চাষ করছি। হাঁসের বাচ্চা ও খাদ্য সামগ্রীর মূল্য অধিক হওয়াতে উৎপাদন খরচ বেশি তাই আমরা আশানুরুপ ভাবে লাভবান হচ্ছে না।
উক্ত দপ্তর যদি আর্থিক ও ঔষধ সহায়তা প্রদান করে তা হলে আমরা খামারিরা আরো বেশি লাভবান হবো। সাপ্তাহিক ডুমুরিয়া হাটের মাংস বিক্রেতা গোনালী গ্রামের কার্তিক জানান, ১ কেজি ৬/৭ গ্রামের একটি হাঁস ৫’শ টাকা দিয়ে ক্রয় করে উক্ত হাঁসের মাংস বিক্রয় প্রক্রিয়ায় আনতে যে খরচ হয় তার পর প্রতি কেজি ৫শ ৫০টাকা বিক্রি করে সামান্য লাভ হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ভেটেরিনারি সার্জন ডাক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, এ উপজেলায় প্রতি বছর হাঁসের মাংসের চাহিদা অনুযায়ী হাঁস উৎপাদন হয়ে আসছে। বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী হাঁস পালন প্রতি বছর তা বৃদ্ধিও পাচ্ছে। কোন হাঁস খামারি কোন সমস্যার কথা বললে তাৎক্ষণিক ভাবে খামার পরিদর্শন করে ঔষধ সহায়তার পাশাপাশি করণীয় বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করছি। রবিবার (১৬ফেরুয়ারী) দুপুরে সরজমিনে
শিবপুরবাদুর গাছা বাসায় গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার হাঁস দল বেঁধে পুকুরে ছোেটাছুটি করছে। প্রাণবন্ত ও উন্মুক্ত পরিবেশে হাঁসছানারা পুকুরের পানিতে সাঁতার কেটে খেলছেন। খাদ্যের জন্য কিচির মিচির করছেন। আর হাঁসদের এমন কিচির মিটির শব্দে হাস্যরসে স্বপ্নসিড়িতে পৌঁছে যাচ্ছেন পিন্টু সরকার বড় একটি বালতি করে হাঁসদের খাবার নিয়ে আসতে আসতে মৃদু হেসে পিন্টু বলেন, এ সব হাঁস ছানা নয়। যেন আমার লালিত পালিন সন্তান। ক্ষুদ্র আকারে নিয়ে এসে নিজ যত্নে তাদের আমি বড় করি। এরাই আমার ভাগ্য উন্নয়নের স্বপ্নসিড়ি।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল কবির বলেন মত উদ্দ্যোগতাদের জন্য প্রাণীসম্পদ বিভাগ সহযোগিতা করতে সব সময় প্রস্তুত। আমরা আমাদের অফিসের মাধ্যমে কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা এবং হাঁসের টিকা প্রদানের পরামর্শ ফ্রী।
সরকারী রেট প্রতি হাসের টিকার জন্য ৫০পয়সা করে ডুমুরিয়া প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও খামারিসহ সকল হাঁস খামারিদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনাসহ কারিগরি প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা এ দপ্তরে রয়েছে।