গাজী জাহিদুর রহমান, তালা : তালা উপজেলায় দিন দিন বেড়েই চলেছে কুল চাষ। এ বছর ফলন ও বাজারমূল্য ভাল থাকায় কৃষকরাও খুশি। এছাড়া অত্র এলাকার কুল দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ামত শক্তি হিসাবে দেশকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় ১৫০ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে। বেসরকারিভাবে আরো ২০-৩০ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে বলে জানা গেছে। অত্র এলাকার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কম খরচে বেশি লাভবান হওয়ায় কুল চাষের প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছে চাষিরা। বিশেষ করে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে দিন দিন ক্রমাগতভাবে কুলের চাষ বেড়েই চলেছে।
এখানকার কৃষকদের চাষকৃত কুল দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
জানা গেছে, মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় জেলায় কুলের চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সাতক্ষীরা জেলার কুল দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয় তার বেশির ভাগ কুল তালা উপজেলা থেকে সরবরাহ করা হয়। উপজেলার মধ্যে মিঠাবাড়ি, নগরঘাটা, ভৈরব নগর, শাকদহ, জাতপুর, ইসলামকাটী, মহান্দী, উথালী, নাংলা, সুজনশাহা, খলিলনগর এলাকায় ব্যাপক কুলের চাষ করা হয়েছে। অত্র অঞ্চলে বাউকুল, আপেলকুল, তাইওয়ানকুল, নারিকেল কুল, ঢাকা নাইনটিসহ বিভিন্ন জাতের কুলের চাষ হচ্ছে।
সফল কুল চাষি মো: পাঞ্জাব আলী জানান, তিনি প্রায় সাত বছর যাবত কুলচাষ করে আসছেন। এবারও ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে সেখানে বলসুন্দরী, নারকেল, আপেল, কাশ্মীর ও টক জাতের ২৭০টি মতো নানা প্রজাতির কুলগাছ রোপণ করেছেন। এতে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। বাজারদর স্বাভাবিক থাকলে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকার কুল বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মিঠাবাড়ি গ্রামের আব্দুল মালেক ৭ বিঘা জমিতে, হাবিবুর রহমান ৪ বিঘা জমিতে, নগরঘাটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক চার বিঘা জমিতে, একই গ্রামের আব্দুর রহিম সাত বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছেন।
এসব চাষিরা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কুলের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর পাইকারি হারে ১২০-১৪০ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে, এভাবে যদি বাজার দর ঠিক থাকে তাহলে অনেক লাভ হবেন তারা।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, সর্বশেষ তথ্য মতে এবার অত্র উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে। প্রদর্শনী প্লট করে তাদের সার ও বিভিন্ন প্রজাতির কুলের চারা বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।