তালা প্রতিনিধি : তালা উপজেলার কলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছে। এ সময় একপক্ষের লোকজন জনরোষ থেকে বাঁচতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে তালা থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে উক্ত ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে শতাধিক লোক অবস্থান করছে। তালা থানা পুলিশ তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন। প্রধান শিক্ষকের কক্ষে দেখা যায় সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান ও তার পক্ষের দুইজন কে সাথে নিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন। মাঠের একপাশে স্থানীয় যুবলীগ নেতা আফজাল হোসেন (৩৫), তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা (২৫) ও মা কুলছুম বেগম (৫৫) আহত অবস্থায় পড়ে আছে। আফজালের পরিধেয় জামা লুঙ্গী রক্তে ভিজে গেছে। তার মায়ের মুখমণ্ডল দিয়ে রক্ত ঝরছে। এ আবস্থায় আহতদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাদী ও তালা থানা পুলিশ গাড়িতে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর চেষ্টা করছেন।
আহত আফজাল হোসেন বলেন, গ্রামের ২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গায়ের জোরে ও ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘদিন যাবৎ সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান দখল করে রেখেছেন। এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের দাবি ছিল নির্বাচনের মাধ্যমে এই স্কুলে অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের। কিন্তু জনগণের দাবি উপেক্ষা করে আব্দুর রহমান ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা যোগসাজসে গোপনে নিজেদের পছন্দের লোক নিয়ে কমিটি গঠনের চেষ্টা করছে। এ সময় আমরা বাঁধা দিলে কলিয়া গ্রামের মৃত্যু জব্বার মোড়লের ছেলে আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে তার ভাই আতিয়ার মোড়ল, রহিম মোড়লের ছেলে আলিনুর মোড়ল, বজলু মোড়লে ছেলে ইকরামুল কবির বাবলু, ইনামুল কবির পিন্টু রহিরাগত সন্ত্রাসী এনে আমাকে মারধর শুরু করে। এ সময় আমার বৃদ্ধা মা ও স্ত্রী সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসলে তাদের ও মারধর করে আহত করে। খবর পেয়ে গ্রামের লোক এগিয়ে আসলে তারা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আশ্রয় নেয়। এসময় জনতার ইটের আঘাতে আলিনুরও আহতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান বলেন, এই বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের জন্য প্রধান শিক্ষিকা সকল অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। উপস্থিত অভিভাবকদের কণ্ঠভোটে নির্বাচন চলাকালিন সময়ে আফজাল হোসেন বাঁধা দিয়ে বলে, সরাসরি ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরবর্তীতে মাঠের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। আমাকে আক্রমণ করতে গেলে আমি অফিসরুমে চলে আসি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিদা খাতুন বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে মঙ্গলবার অবিভাবক সদস্য নির্বাচনের জন্য সকল অবিভাবকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কণ্ঠভোটে নির্বাচন চলছিল। এ সময় মাঠে মারামারি বেঁধে গেলে উভয় পক্ষের ৪ জন আহত হন।
তালা থানার এস আই দেলোয়ার হোসেন ও ডিএসবি সদস্য রুবেল হোসেন বলেন, মারামারির সংবাদ পেয়ে ওসি স্যারের নির্দেশনায় আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি তবে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে। আমরা আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। মামলার বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিবেন।
তালা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মমিনুল ইসলাম পিপিএম বলেন, কলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে। এখনো কোনো পক্ষই মামলার আবেদন করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তালার দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৪
![](https://dainikjanmobhumi.com/wp-content/uploads/2024/02/20-02-2024-64-330x220.jpg)
Leave a comment