
দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি : দাকোপে আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ বজায় রেখে এবং এডিসি ও কমিশনার আদালতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তফশিল ভুক্ত জমি থেকে বেদখল করাসহ ধান এবং অন্য যেকোন ফসল কর্তন করা থেকে সহকারী কমিশনার ভূমিকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার কালিকাবাটি এলাকার ভূক্তভোগি মনিরুল হক। শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় দাকোপ প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লাউডোব ইউনিয়নের কালিকাবাটি এলাকার মোসলেম মল্লিকের ছেলে মনিরুল হক বলেন, লাউডোব মৌজার ১১.৬৩ একর জমি আমার নানা আদম গাজী ১৯৫০ সালে বন্দোবস্তের মাধ্যমে ও দেওয়ানী আপীল ৪৮৯/৯২ নং মামলার রায়ের মধ্যদিয়ে অর্জন করেন। বর্তমানে তার ওয়ারেশ আমার মাতা নুরজাহান বেগমসহ ১৮ ভাই বোন শান্তিপুর্ন ভাবে প্রায় ৭০/৮০ বছর যাবৎ ঘর বাড়ী, পুকুর কেটে এবং বিলান জমিতে চাষাবাদ এবং ফসল উৎপাদনসহ আমরা ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু এস এ জরিপে ১/১ খতিয়ানে ভ্রমাত্মক ভাবে রেকর্ড হয়। পরে জেলা প্রশাসকসহ ১১ জনকে বিবাদী করে দেঃ ১৬১/৯০ নম্বর মামলা তৎপর দেঃ আপিল ৪৮৯/৯২ নম্বর মামলা করে গত ১৩/০১/৯৬ আমার নানা আদম আলী গাজির নামে স্বত্ব স্বার্থ দখল এবং অধিকার ঘোষিত হয়। উক্ত রায় অদ্যাবধি বহাল আছে। এ ছাড়া ১৯৮১ সাল পর্যন্ত সরকারি কর খাজনা পরিশোধ। বি আর এস জরিপে ১/১ খতিয়ানে উক্ত জমি ভি.পি তালিকায় ভ্রমাত্মক ভাবে গেজেট হলে আদম আলী গাজির ওয়ারেশগণ বাদী হয়ে জেলা জজ আদালতে অর্পিত ৫১২৪/১২ নম্বর মামলা দায়ের করে যাহা বর্তমানে সাব জজ তৃতীয় আদালতে চলমান। উক্ত মামলায় গত ০৪/০৬/২৪ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আবেদনের প্রেক্ষিতে নালিশী জমিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষ স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ বহাল রয়েছে। কিন্তু গত ১৩/১০/২২ প্রতিপক্ষ বিলাল শেখ গং এবং দিপক কুমার মন্ডল গং ভুল তথ্য সরবরাহ করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) থেকে ১১.৬৩ একর জমির মধ্যে ৯.৮৯ একর জমি বাংলা ১৩৭৫ সাল থেকে ১৪২৯ সাল পর্যন্ত ৫৪ বছরের ডিসি আর নেয়। যার বিরুদ্ধে এডিসি আদালতে এবং অতিরিক্ত কমিশনার আদালতে মামলা চলমান। উক্ত মামলায় আমাদের দখল আছেন মর্মে প্রতিবেদন রয়েছে। আমাদের রোপনকৃত পেকে যাওয়া ধান জোর পুর্বক ডিসি আর হোল্ডার বিল্লাল গং কেটে নেওযার জন্য উপজেলা সহকারী কশিনারের মাধ্যমে গত ০২/১২/২৪ জমিতে হাজির হলে উপস্থিত সকলের আবেদনের কারনে ধান কাটা বন্ধ করেন। পরবর্তীতে গত ০৫/১২/২৪ আমাদেরকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে বিল্লাল গংদের দ্বারা অন্যায় ভাবে লাভবান হয়ে আমাদের রোপনকৃত ধান আগামী ০৮/১২/২৪ সহকারি কমিশনার নিজে উপস্থিত থেকে জোরপুর্বক কেটে নেওয়ার হুমকি দেয়। আমাদের রোপনকৃত উক্ত ধান জোর পুর্বক কাটতে গেলে যে কোন ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে আমার আশংকা। সে কারনে খুলনার বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা তৃতীয় আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ মেনে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা যাতে ফসল কর্তনসহ শান্তিপুর্ন ভাবে ভোগদখলে থাকতে পারি আপনাদের পত্র-পত্রিকায় লেখনির মাধ্যমে এ আহবান জানাচ্ছি। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল সামাদ, কামরুজ্জামান, আলামিন গাজি।
এ বিষয়ে বিল্লাল শেখ জানান, আমরা সরকারের কাছ থেকে ডিসি আর নিয়েছি। কাগজ পত্রে পাইলে সরকার আমাদের জমি দিবে। মনিরুলদের সাথে আমাদের জমি নিয়ে কোন বিরোধ নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি জুবায়ের জাহাঙ্গীর বলেন, কাগজ পত্রে যেহেতু ভিপি সম্পত্তি সেহেতু ওই জমি সরকারের দখলে থাকার কথা। আর আদালতের স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার আদেশ রয়েছে। তা ছাড়া ওই সম্পত্তি ডিসি আর দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তারপরও জমিতে তো ধান ফেলে রাখা যাবে না এবং উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।