জন্মভূমি ডেস্ক : দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিভিন্ন আইন ও উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও নানাভাবে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে এবং নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। একইসঙ্গে নারীর প্রতি সহিংসতার মাত্রার ধরনও দিনদিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। এমন অভিযোগ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে মহিলা পরিষদের বক্তারা এ অভিযোগ করেন।
এ সময় নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বাড়াতে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন ও আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেন সংগঠনটির নেতারা। নির্বাচনী এলাকা পুনর্র্নিধারণের জন্য রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে বিষয়টি রাখার দাবিও জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণা ও সহিংসতা সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করছে। ২০২২ সালে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন এবং বর্তমান সময়ে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ধর্মের নামে নারীর বিরুদ্ধে কুৎসা, অশোভন উক্তি, নারীকে নানাবিধ অবমাননার সম্মুখীন করা হচ্ছে। নারীর প্রতি একটি বিদ্বেষমূলক ও নেতিবাচক মনোভাব সমাজে ব্যাধির মতো ছড়াচ্ছে। মৌলবাদী গোষ্ঠী শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মহিলা পরিষদ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থান এই পরিস্থিতিকে জটিল ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এ অবস্থায় করণীয় নিয়ে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মুসলেম। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে নারী-পুরুষের সমঅধিকারসহ অসাম্প্রদায়িক, সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তোলার অঙ্গীকার থাকতে হবে।
এছাড়াও নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বাড়াতে, নারী নির্যাতন কমাতে, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, দলিতসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার সংরক্ষণ, নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া অধিকার নিশ্চিতকরণ, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি।