জন্মভূমি রিপোর্ট
নগরবাসীর লাঘব হয়েছে দীর্ঘদিনের পানির কষ্ট। এ প্রকল্পে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করে লবণাক্ততা বৃদ্ধির আওতামুক্ত থেকে খুলনা শহরে নিরবচ্ছিন্ন ও স্থায়ীভাবে পানি সরবরাহে সক্ষম। প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে শহরের ১৫ লাখ মানুষের মধ্যে ১১ লাখ মানুষই এখন সুপেয় পানি পাচ্ছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ও খুলনা ওয়াসার যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
তিনি আরও বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যে শতভাগ নগরবাসী পাবে নিরাপদ পানি। নিরাপদ পানি নিশ্চিতের লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে খুলনা ওয়াসা। যা শতভাগ সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী। একসময় খুলনাবাসী সুপেয় পানির কষ্টে ছিল। কিন্তু খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সে কষ্ট দূর হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে শহরে মাত্র ১৩ হাজার হোল্ডিংয়ে পানি সরবরাহ করা হতো।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় নগরীর সিটি ইন হোটেলে অনুষ্ঠিত ফ্রম দি গ্রাউন্ড আপ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ পিইঞ্জ। বিশেষ অতিথি ছিলেন এডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং, জাইকার বাংলাদেশ শাখার সিনিয়র রিপ্রেস্টিব মিউরা মারি প্রমুখ।
এসময় বক্তরা বলেন, মহানগরের সুপেয় পানির সংকট নিরসন করছে গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী। ‘খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় রূপসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে চলছে এ পরিশোধন কার্যক্রম। এতে বদলে গেছে খুলনার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। বহুলাংশে দূর হয়েছে ১৫ লাখ মানুষের শহরের দীর্ঘদিনের বিশুদ্ধ পানির সংকট।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে খুলনা শহরের ১৫ লাখ মানুষের প্রতিদিন গড় পানির চাহিদা ২৪ কোটি লিটার। এ চাহিদা পূরণে খুলনা ওয়াসা ভ‚-গর্ভস্থ স্তর থেকে উত্তোলিত মাত্র ১১ কোটি লিটার পানি সরবরাহে সক্ষম। এর মধ্যে ছয় কোটি লিটার গভীর নলকূপ ও পাঁচ কোটি লিটার পানি চাপকলের মাধ্যমে উত্তোলন এবং সরবরাহ হয়। এটি মোট চাহিদার মাত্র ৪৫ শতাংশ।
উল্লেখ্য ২০১১ সালের ২১ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প’ অনুমোদন পায়। এর মধ্যে জাইকার ঋণ এক হাজার ১২৬ কোটি এবং এডিবির ৫২১ কোটি টাকা। বাকি টাকা বহন করেছে সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে খুলনা শহরে ১১ কোটি লিটার পানি সরবরাহ বেড়ে যায়। সে হিসাবে দৈনিক খুলনা ওয়াসা নগরীতে প্রায় ২১ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করছে, যা নগরবাসীর মোট চাহিদার ৮৮ শতাংশ। মধুমতি মেটাচ্ছে প্রায় ৫৩ শতাংশ চাহিদা।