জন্মভূমি ডেস্ক : পূজা চলাকালে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মণ্ডপ ও বাড়িঘর পাহারা দিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, সারা দেশে ৩২ হাজার চারশত আটটি পূজা মণ্ডপ রয়েছে। পূজায় নিরাপত্তার দায়িত্বটা পুলিশের একার পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়। পূজা পালনকালে কোনো প্রকার সহিংসতা যাতে না ঘটে, বাধা বিঘ্ন না আসে, সেই ব্যাপারে আমাদের সবার উচিত তাদের পাশে থাকা। আমি সারা দেশের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও আমাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের এই দুর্গোৎসবে সতর্ক পাহারা দিতে বলেছি।
শুক্রবার সকালে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ধর্মীয় উৎসবের সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়টা সব সময় আলাদা একটা বৈশিষ্ট্যের মধ্যে থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী যারা আছেন, তাদের ধর্মীয় উৎসব পালনে ভায়োলেন্সের মতো ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ভোটের সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা না হলে আমাদের চলে না, কিন্তু তারা যখন বিপদে পড়বে, তখন আমরা তাদের পাশে থাকি না। এটাতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না। আমার ভোটের সময় তাদের প্রয়োজন অথচ তাদের জীবন যাপনে তাদের ধর্মীয় পালনে আমাদের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হবে, যারা ঘটনা ঘটায় তারা দুর্বৃত্ত। আমি এদেরকে হিন্দু মুসলমান বুঝি না। এদের পরিচয় এরা দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্ত মুসলমানদের মধ্যে নেই তা বলার উপায় নেই। আমাদের পার্টির সবাই খুব ভালো মানুষ এটা দাবি করারও কোনো উপায় নেই। কারণ, কিছু কিছু ঘটনা ঘটে, বাড়ি ঘরে আগুন লাগে, জমি দখল করে, এগুলো একটা অসভ্য উদ্দেশ্যে ঘটনাগুলো ঘটিয়ে থাকে। এদের ব্যাপারে আমরা সতর্ক করছি। পুনরাবৃত্তিরোধে এ ধরনের ঘটনার জন্য আমরা কিছু কিছু ব্যবস্থা নিতেও শুরু করেছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব ঘটনা যখন কোথাও ঘটে, আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যখন জানানো হয়, তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেন। যেখানে যাকে দরকার তাকেই ফোন করেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। আমরা যারা দলের দায়িত্বে আছি তাদেরকে ডেকে বিস্তারিত শোনেন। এ ধরনের ঘটনার প্রশ্রয় দেওয়ার উচিত নয় বলেও জানান। এসব বিষয়গুলো লোক দেখানোর জন্য তিনি বলেন না। এটা তিনি মন থেকেই বলেন। এ বিষয়ে আমাদের ভুল বুঝবেন না। বাস্তব পরিস্থিতিতে আমাদের কারো অনুকূলে নয়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার সহিংসতা ঘটনাটি দলের গোচরে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে নিজেই খোঁজখবর নিয়েছেন। দল থেকে গোটা ব্যাপারটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ অপকর্ম করলে সাংগঠিনক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল ও সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিকক, সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কালবেলার সম্পাদক এবং প্রকাশক সন্তোষ শর্মা, দপ্তর সম্পাদক মিলন কান্তি, জয়ন্ত কুমার দেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।