পাইকগাছা অফিস
সিডর ও আইলার পর সর্বশেষ আম্ফানের ক্ষত এখনো শুকাইনি উপক‚লবর্তী খুলনার পাইকগাছার সাধারণ মানুষের। একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় লেগেই আছে। ক্ষতিগ্রস্ত এ অঞ্চলটিতে লবণাক্ততার রেশ কাটতে শুরু করলে আসে নতুন বিপর্যয়। তীব্র খরায় এই এলাকায় চরছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সর্বত্র প্রচণ্ড খরতাপ ও গরমে উপজেলার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে তাপ মাত্রা বেড়েই চলেছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, এ ধরনের তীব্র তাবদাহ আরও কয়েকদিন থাকবে। আপাতত এ জেলায় আগামী ২/৩ দিন বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। এদিকে প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পুকুর ও জলাশয় শুকিয়ে গিয়েছে। এলাকার অগভীর নলক‚প রয়েছে অধিকাংশই অকেজো। সচলগুলোর পানি লবণাক্ত ও আর্সেনিকযুক্ত। যার কারণে খাবার পানি আনতে দেড়-দুই কিলোমিটার দূরে যেতে হচ্ছে। বাসাবাড়ি ও হোটেল-রেস্টুরেন্টে সুপেয় পানির অভাবে বিভিন্ন পুকুর ও খালের দুর্গন্ধযুক্ত পান করার অযোগ্য পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকার হাসপাতাল ও চেম্বরগুলোতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
কাঠফাটা রোদে ফসলের মাঠ, খাল, বিল ও প্রান্তর ফেটে চৌচির। দিনভর সূর্যতাপে নুইয়ে পড়ছে গাছের পাতাও। নেতিয়ে পড়েছে সবজি। বৃষ্টি বা পানির অভাবে ফসলাদী মরে যাচ্ছে। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে আম, জাম, লিচুসহ বিভিন্ন প্রকার ফল। মহাসঙ্কটে পড়েছেন তরমুজ, মিষ্টিআলু, চিনাবাদামসহ সব্জি চাষিরা। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী পানির জন্য অনেক জায়াগায় দোয়া ও প্রার্থনা করছে। পানি সংরক্ষণ ও নিরাপদ পানি সরবরাহে জেলা পরিষদের পুকুর, দীঘি ও নিরাপদ জলাশয় সংস্কারসহ নতুন পুকুর খনন করে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চত করতে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।