পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা : পাইকগাছায় শিবসা নদীর চরভরাটি সরকারী জমি দখল করে পাঁকা স্থাপনা নির্মাণ করছে ভূমি দস্যুরা। উপজেলা সদরে প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন ধরনের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এব্যাপার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। সরজমিনে দেখা যায়, কোটি কোটি টাকা মূল্যের শিবসা নদীর চরভরাটি সরকারী জমি দখল করে পাঁকা স্থাপনা করছে খুলনার পাইকগাছায় মৎস্য আড়তদারী সমবায় সমিতি লি.। এছাড়া কতিপয় ব্যক্তি শিববাটির ভাঙনকূল সংলগ্ন এলাকায়ও বেড়িবাঁধ দিয়ে চরভরাটি জমি দখল করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সদ্য সমাপ্ত সংসদ নির্বাচনের কাজে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যস্ত থাকার সুযোগ নিয়ে পৌর সদরের মাছ কাঁটা ঘেষা সরকারী জমিতে অবৈধ ভাবে পাঁকা পাঁচালী দিয়ে ভিতরে স্থাপনার কাজ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপজেলা ও পৌরসভার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের ক্ষরস্রোতা শিবসা নদীতে পলি জমে নদীর দু’পাড়ে বিশাল আকারের চর জেগে উঠে। বিভিন্ন সময় নদী পাড়ের বাসিন্দারা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কারো না কারোর ছত্র ছায়ায় থেকে ১নং খাস খতিয়ানের নদী ভরাটি সরকারী জমি দখল করে মৎস্য ঘের, ঘরবাড়ী ও কাঁচা-পাঁকা স্থাপনা তৈরী করে দখল করেন। উপজেলা প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে এ সব ঘের ও স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও ভূমি দস্যুদের দৌরাত্ম থেমে থাকেনি। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় মৎস্য আড়তদারী সমিতি প্রায় ১বিঘা নদী ভরাটি সরকারী জমিতে বালি ভরাট করে পাঁকা পাঁচালী দেওয়া শুরু করেন। ইতোপূর্বে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে নিয়ে সাবেক ইউএনও মমতাজ বেগম স্থাপনার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে প্রশাসনের এ দু’কর্মকর্তার বদলি ও সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে আড়ৎদারী সমিতি পাঁচালীর ভিতর বিশাল আকারের পাঁকা স্থাপনার নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। সরকারী জমিতে বালি ভরাট করে পাঁকা স্থাপনা তৈরীর বিষয়ে জানতে চাইলে পাইকগাছা মৎস্য আড়তদারী সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন ও সম্পাদক মিঠু নায়েব দাবী করেন আমরা ক্রয়কৃত জমির উপর স্থাপনা করছি। তবে গদাইপুর ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা মোছা. লতিফা খানম বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে খবর পেয়ে আড়ৎদারী সমিতির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, নদীর জমি শ্রেণি পরিবর্তন করে দখল ও পাঁকা স্থাপনা করার প্রশ্নই উঠে না। নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগ নিয়ে যারা সরকারী জমিতে এসব স্থাপনা করছেন তা দ্রুত উচ্ছেদ করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।