পাইকগাছা প্রতিনিধি : খুলনার পাইকগাছা উপজেলার, পৌরসভা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রামাঞ্চলে সজনে গাছের ডালে ডালে ভরে গেছে সাদা ফুল। সাদা ফুলের চারিপাশে মৌমাছির গুনগুন গান গাইতেও দেখা যাচ্ছে।মাঘ-ফাল্গুন মাস জুড়ে সজনে গাছে ফুল আসার মৌসুম। চৈত্র মাসে ফুল থেকে হয় সবুজ ডগা, আর এই ডগা কিছুদিন পরে সজনে রূপান্তরিত হয়।
সকল বয়সের লোকের কাছে খাদ্য হিসেবে সুস্বাদু,ও বেশ প্রিয় সবজি। বৈশাখের গরমে মাছের সাথে সহজের তরকারি ও ডাল সজনের সুস্বাদু তরকারি সব সব ধরনের লোকের কাছে প্রিয় খাবার।সজনের তরকারি যেমন সুস্বাদু ও তেমনি ওষুধি গুণসম্পন্ন। পুষ্টিবিদদের মতে,সজনেতে আ্যানিমিয়া, জয়েন্ট পেইন, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ডায়রিয়া, হার্ড, ব্লাডপেসার, কিডনিতে পাথর ধ্বংস, মায়ের দুধ বৃদ্ধি করাসহ বিভিন্ন ঔষুধি গুণাগুণ সহ আছে প্রায় ৩০০ ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। সজনের বাকল, শিকড়, ফুল-ফল, পাতা, বীজ এমনকি এর আঠাতেও ঔষধি গুণ আছে। পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং মৌসুমি সবজির মধ্যে সজনে অন্যতম। যা দেশের সব গ্রামাঞ্চলে পাওয়া যায়।
পাইকগাছা উপজেলার পৌরসভা সহ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, এই এলাকায় প্রচুর সজনের গাছ রয়েছে। শীতের মৌসুম কাটিয়ে এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে সজনে গাছ। যত্নে নয় তবে রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙিনায় এবং পুকুরের আশেপাশে, অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা গাছে, বাতাসে দোল দিচ্ছে সজনে ফুল। অবহেলায় বেড়ে উঠলেও কিছুদিন পরই বেশ কদর বাড়বে। একটি সজনে গাছ থেকে গাছের মালিক কয়েক মণ সজনে সংগ্রহ করবে গাছ থেকে। নিজেরা খেয়ে এবং আত্মীয়-স্বজনদের দিয়েও অনেক অর্থ উপার্জন করবে এই গাছ থেকে। এই গাছের উৎপাদন খরচ নেই বললেও চলে, প্রতিবছর গাছ থেকে সজনে সংগ্রহ করার পরে, ডাল কেটে দেওয়া হয়, আরে ডাল বিভিন্ন জায়গায় রোপন করেই সজনে গাছের রূপান্তরিত করা হয়। অধিক লাভজনক। বাজারে ব্যাপক চাহিদাও আছে। চাঁদখালী ইউনিয়নের কৃষক কুদ্দুস গাজী বলেন, হাট-বাজারে ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন সবজি। সজনে বহু গুণে ভরা, সুস্বাদু সবজি। উৎপাদন খরচ নেই, বললেই চলে অধিক লাভজনক প্রথমে দামটা ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও কমতে কমতে ২০ টাকা কেজিতে নেমে আসে। শুধু গ্রামেরই মানুষের কাছেই নয়, শহরের মানুষের কাছেও সজনে ডাটার ব্যাপক কদর রয়েছে।শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মুহাম্মদ কওসার আলী গাজী বলেন সজনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধে গুণসম্পন্ন সবজি ,ও এর পাতাও খুব উপকারী। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ায় আবার আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় ভাইরাসজনিত অসুখকে দূরে রাখে সজনে। প্রচুর ফসফরাস থাকায় হাড়ের জোর বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ও রক্তাল্পতা কমাতে সজনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। হার্টের অসুখ দূরে ঠেকাতেও এই সবজি কার্যকর। জলবসন্ত রোগ ঠেকাতে সজনে খুবই কার্যকর। সজনে একটি পরিবেশবান্ধব ও ঔষধিগুনসম্পন্ন আশঁজাতীয় সবজি। সজনেকে বলা হয় মিরাকল ট্রি। এর পাতা, ফুল, ফল সবই খাওয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই উপজেলায় আনুমানিক ১৬০ থেকে ১৭০ হেক্টর জমিতে সজনে চাষ হয়, একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে কমবেশি সজনে চাষ হয়, তবে দেলুটি, গড়ুইখালী ও চাঁদখালি ইউনিয়নে বেশি গাছ থাকার কারণে এই এলাকা গুলোতে বেশি সজনে উৎপাদন হয়।
পাইকগাছায় সবুজের মাঝে সাদা ফুলে ভরে গেছে সজনে গাছ

Leave a comment