জন্মভূমি ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের ক্যান্টিনের পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্যান্টিন মালিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ সময় ক্যান্টিন মালিকের দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন তিনি।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে সূর্যসেন হল ক্যান্টিনে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী হল ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত আরাফাত হোসাইন অভি সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ভুক্তভোগী ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন বলেন, অভি ভাই গত পরশু (শনিবার) ক্যান্টিনে খাবার নিয়ে যায়। তখন আমি তাকে আগের পাওনা টাকা দেওয়ার বিষয়ে বলি। তখন তিনি কিছু না বলে খাবার নিয়ে যান। পরে গতকাল (রবিবার) তিনি আর আসেনি। আজ সোমবার যখন আবার দুপুরে খাবার নিতে আসেন তখন আমি ভাইকে পাওনা টাকার ব্যাপারে বলি। পরে তিনি আজকের খাবারের টাকাও বাকি খাতায় লিখে রাখতে বললে আমি ম্যানেজারকে দিয়ে লিখে রাখি।
ফাহিম বলেন, এর ঠিক দুই মিনিট পরেই তিনি আবার এসে আমাকে ক্যাশ কাউন্টার থেকে ডেকে নিয়ে কার সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হয় জিজ্ঞেস করেন। আমি বলি, ভাই আমি তো আপনার কাছে শুধু বাকি টাকা চেয়েছি, আর কিছু না। এ সময় তিনি আমার দাড়ি টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন এবং আমাকে চড়, কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। তার সঙ্গে অন্যরা তাকে আটকে রাখতে চেষ্টা করলেও তিনি আমাকে মারতে থাকেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। আমাকে কোনো কারণ ছাড়া মারা হয়েছে। এখন আমি অভিযোগপত্র রেডি করে প্রভোস্ট স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করবো।
অভিযোগের বিষয়ে আরাফাত হোসাইন অভি বলেন, ‘আমি দুপুরে খাবার খেতে গেলে ক্যান্টিন মালিক বকেয়া টাকা চায়। তখন আমি বিকাশে টাকা তুলতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানাই। পরে আমি সেখান থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ম্যানেজারকে বললেন আমাকে যেন নেক্সট টাইম খাবার না দেন। এটা শুনে আমি ক্যান্টিন মালিককে বললাম আপনি এটা কেমন কথা বললেন? একজনের সমস্যা তো থাকতেই পারে। এরপর হঠাৎ করে তিনি আমাকে ধাক্কা মারেন, আমিও তার কলার টেনে ধরি। তারপর ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার দাড়িতে আমার হাত লেগে ছিঁড়ে যায়। কিন্তু আমি তাকে মারিনি।’
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেছি। আমরা এসব বিষয়ে কাউকে কোনো ছাড় দেবো না। সে যত বড় নেতাই হোক সেটা দেখার বিষয় না। আমরা তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।’
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূইয়া বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।