জন্মভূমি ডেস্ক : গেল ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর এবার জাতীয় পরিষদের নেতা, অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে (এসআইসি) যোগ দিয়ে প্রার্থী দিয়েছেন নির্বাচনের জন্য।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটিআই নেতা ওমর আইয়ুব প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) প্রার্থী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে। গতকাল শনিবার দুই দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়। এদিন জাতীয় পরিষদের সচিবালয় থেকে দুজনের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়। ফলে আজ রোববার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী পদে ভোটগ্রহণ হবে। জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত সদস্যরা গোপন ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করবেন।
এর আগে জাতীয় পরিষদ সচিবালয় থেকে আজ, অর্থাৎ ৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়। শনিবার বেলা ২টার মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়।
দেশটির সংবিধানে বলা আছে, প্রধানমন্ত্রী হতে হলে কোনো প্রার্থীকে ৩৩৬ পার্লামেন্ট সদস্যের মধ্যে ১৬৯ জনের ভোট পেতে হবে। যদি প্রধানমন্ত্রী পদে দুইয়ের অধিক প্রার্থী থাকেন এবং কোনো প্রার্থীই সংখ্যাগরিষ্ঠতা (১৬৯ ভোট) পেতে ব্যর্থ হন; তবে আবারও ভোট নেওয়া হবে। প্রথম দফায় সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুজন পরবর্তী দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যিনি ৫১ শতাংশ ভোট পাবেন, তিনি পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।
আল-জাজিরার এক খবরে বলা হয়, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট ৩৩৬টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ৭০টি আসন সংরক্ষিত। নারীদের ৬০টি ও সংখ্যালঘুদের জন্য ১০টি। তবে সংরক্ষিত আসনের সদস্য নির্বাচন ছাড়াই আজ প্রধানমন্ত্রী পদে ভোট হচ্ছে।
এদিকে পিএমএল-এনের প্রার্থী শাহবাজ শরিফকে সমর্থন দিয়েছে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), ইস্তেকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। ফলে আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ অনেকটাই সুগম তার। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী হতে যত আসন দরকার, ওমর আইয়ুবের ততটি আসন নেই। তবে প্রশ্ন উঠছে সংরক্ষিত আসন ভাগাভাগি নিয়ে। এ বিষয়টির এখনো সুরাহা হয়নি।
অপর দিকে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনের আগেই গতকাল শুক্রবার পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা সরদার আয়াজ সাদিক দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী এসআইসি ও পিটিআই-সমর্থিত মালিক আমির দোগার পরাজিত হন। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের পর জাতীয় পরিষদের আইনপ্রণেতারা ৯ মার্চ দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।
পিটিআই-সমর্থিত বর্তমান প্রেসিডেন্টের স্থলাভিষিক্ত হবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। ইতিমধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি। তাকে সমর্থন দিয়েছে জোটের পিএমএল-এন। এদিকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল থেকে মনোনীত করা হয়েছে পশতুনখাওয়া মিল্লি আওয়ামী পার্টির প্রধান মাহমুদ খান আচাকজাইকে। শনিবার এসআইসি এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। আচাকজাই বেলুচিস্তানের কিলা আবদুল্লাহ-কাম-চমনের এনএ-২৬৬ আসন থেকে জাতীয় পরিষদের আসনে জয়ী হয়েছেন। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান তার দলের আইনপ্রণেতাদের আচাকজাইয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। পিটিআই চেয়ারম্যান গহর খান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আচাকজাইয়ের মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন। পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ৯ মার্চ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই পদে এখন পর্যন্ত পাঁচজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৫ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করা যাবে।