প্রথম ধাপে করোনা মহামারি আকারে শুরু হলে সকল স্তরের মানুষ শংকিত হয়ে পড়েন। চিকিৎসক নার্সসহ স্বাস্থ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় সকলেই অনেকটা দূরে সরে দাঁড়ায়। এসময় তাদেরকে করোনাযোদ্ধা সাহসী চিকিৎসক বলে আখ্যায়িত করা হয়। ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও অনেকেই চিকিৎসা সেবায় ফিরে আসেন। তখন তারা পড়েন ঝুঁকির মধ্যে। অনেকেরই প্রাণ যায়। অনেকটা অনিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে করোনাকে মোকাবেলা করার চেষ্টা চলে। এক পর্যায়ে মানুষ ভয়ে ঘরমুখো হয়ে পড়ে। তাই ধীরে ধীের করোনা কমে এসেছে। এখানে সরকার বা চিকিৎসকদের খুব একটা কৃতিত্ব নেই।
করোনা মোকাবেলা, বর্তমান অবস্থা এবং শীতে দ্বিতীয় ফেইজ শুরু হলে খুলনা বিএমএ’র কি ভ‚মিকা এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখার সভাপতি ডা: শেখ বাহারুল আলম দৈনিক জন্মভ‚মিকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রথম ফেইজে করোনা শুরু হলে মাস্ক, পিপি, ভেন্টিলেটর, আইসোলেসন, অক্সিজেন ব্যবস্থাসহ সব কিছু নিয়েই অনিয়ম দুর্নীতি দেখা দেয়। মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে। যারা বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিল তারাই দ্রæত কারোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন। গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ধস নেমে পড়ে। এসময়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেছে কান্ডজ্ঞানহীন এক শ্রেণির কর্মকর্তাগণ। তখন বিএমএকে আমলাতন্ত্র দূরে সরিয়ে রাখে। এখনও অতীতের সেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। বেসরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এক প্রকার ভেঙ্গে পড়েছে। তাছাড়া পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ক্ষমতা ছিল মাত্র ৩০০টি। সেখানে প্রতিদিন হাজারের উর্ধে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রেও চলেছে বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম, প্রতারণা। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে এক সপ্তাহের বেশী সময় লেগেছে। যে কারণে অনেকেরই রিপোর্ট সঠিক হয়নি। তারা পড়েন ভোগান্তির মধ্যে। এসব কারণে করোনা পরীক্ষার ফল নিয়েও মানুষের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দেয়।
খুলনা বিএমএ’র সভাপতি আরও বলেন, দ্বিতীয় ফেইজ শুরু হলে তা কিভাবে মোকাবেলা করা হবে তা এখনও চোখে পড়ছে না। করোনা মোকাবেলার কৌশলের উপর মানুষের আস্থা নেই। তবে প্রথম ফেইজে যে সব চিকিৎসক নার্স বা স্বাস্থ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তারাই তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। করোনা এখনও রয়েছে। প্রথম ফেইজ শুরু হয় শীতের সময়। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা শীতে দ্বিতীয় ফেইজ শুরু হতে পারে। তবে মোকাবেলার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেই।