করোনার প্রথম ফেইজ শেষ না হতেই দ্বিতীয় ধাক্কার আশংকা দেখা দিয়েছে। থেমে নেই মানুষের জীবন-জীবিকার জন্যে ছুটে চলা। সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করেই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। কোভিড-১৯ সম্পর্কে খুলনার মানুষের অভিজ্ঞতা হয়েছে যথেষ্ট। চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এখন সচেতন। তারপরও সাবধানতার শেষ নেই। প্রথম ধাক্কায় যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে তারই আলোকে দ্বিতীয় ফেইজ মোকাবেলা করা সহজ হবে। মানুষ আগের তুলনায় অনেকটা সচেতন হয়েছে। শীতকাল আসার আগেই মানুষকে প্রস্তুতি নিতে হবে। মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিকল্প নেই।
খুলনা জেলায় করোনা পরিস্থিতি, বর্তমান অবস্থা এবং দ্বিতীয় ধাক্কা শুরু হলে মোকাবেলা করার কি প্রস্তুতি এসব নিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর কথা হয় খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হেসেন-এর সাথে। তিনি দৈনিক জন্মভ‚মিকে বলেন, খুলনায় দেশের অন্যান্য অনেক জেলার তুলনায় করোনার ব্যপকতা কম ছিল। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ি। মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য সকল প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, সামাজকর্মী সকলেই এগিয়ে আসেন। তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, পাড়ায়-মহল্লায় মাইকযোগে প্রচার, মসজিদ থেকে প্রচার প্রভৃতিতে তৃণমূলের মানুষও সচেতন হয়েছে। এলাকা চিহ্নিত করে লকডাউনও করা হয়েছে। সকলেই প্রায় ঘরমুখি হয়ে পড়েন। প্রথমদিকে মানুষ কিছুটা আতঙ্কিত হলেও নিয়ম-বিধি মেনে চলায় করোনার প্রকোপ কমে আসে।
জেলা প্রশাসক বলেন, মানুষকে সচেতন করতে পারায় বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ভালো। প্রতিদিনই জেলায় আক্রান্তের হার কমে আসছে। খুলনা ছাড়াও জেলার বাইরের রোগীরা এখানে এসে ভর্তি হয়। যে কারণে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। এখন সে সমস্যাও অনেকটা কমেছে। তবে মানুষ সচেতন না হলে যে কোন মুহূর্তে করোনা আবারও বেড়ে যেতে পারে।
আগামী শীতে দ্বিতীয় ফেইজ শুরু হতে পারে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই সচেতন থাকার জন্য প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, করোনার প্রথম ধাক্কা শুরু হলে মানুষ যতটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল দ্বিতীয় ধাপে ততটা হবে না। কারণ মানুষের একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। চিকিৎসক, নার্স, স্বেচ্ছাসেবীসহ যারা কোভিড যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন তাদের সকলেরই অভিজ্ঞতা হয়েছে। তারা সবাই এখন জানে, কিভাবে কোভিড মোকাবেলা করতে হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, প্রশাসনের উদ্যোগে গঠিত করোনাকালীন কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য বিশেষ “বেসরকারী মানবিক সহায়তা সেল’ গঠন করা হয়। সেলের মাধ্যমে ২ এপ্রিল থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত প্রায় একশ ২৯ মেট্রিক টন চাল, ছয় মেট্রিক টন ডাল, তিন হাজার তিনশ পাঁচ লিটার তেল, ২০ মেট্রিক টন আলু, সাত মেট্রিক টন লবণ, সাত হাজার দুইশ ৭৮টি সাবান, আট মেট্রিক টন আটা, আট মেট্রিক টন চিনিসহ বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন প্রকার সবজি অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়। মানুষ এখন সচেতন তাই কাজের মাঝে নিজের সুরক্ষা তারা বজায় রাখবে।