তালা উপজেলায় এ বছর পাটের বাম্পার ফলন না হলেও দামে বিজয় খুশি কৃষক। সময় মতো খাল বিল ডোবায় পানি থাকায় কৃষকের পাট পচাতে বেগ পেতে হয়নি। চাষাবাদের শুরুতেই এ বছর প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষকের ক্ষেতের পাট তেমন ভাল হয়নি। এদিকে অনেকেই আবার পাটের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম পাট কেটে একই জমিতে আমনের চাষ করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে তালা উপজেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২হাজার ৮শত ৫০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৮শত ৫০ হেক্টর জমিতে। পাট উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ১২০ বেল।
চাষীরা জানান, এবছর অধিকাংশ জমিতে আবাদ করা হয়েছে তোষা জাতের পাট। পাটের উচ্চতা অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম।
তালা উপজেলার সরুলিয়া ইউনিয়নের আমতলাডাঙ্গা গ্রামের পাট চাষী শহীদুল গাজী জানান, তিনি ছোট বেলা থেকেই চাষ কাজ করে আসছেন। এবছর সে ৪ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। পাটক্ষেতে চার বার ভু-গর্ভস্থ পানির সেচও দিয়ে পাট চাষ করেছেন। আগাম পাট কেটে সে জমিতে ধান চাষ করেছেন। তিনি আরও বলেন, গত বছর তার ক্ষেতের পাট ১০ থেকে ১২ হাত পর্যন্ত লম্বা হয় কিন্তু এবছর ৭ থেকে ৮ হাত লম্বা হয়েছে। দাম ভাল হওয়াতে বেজায় খুশি তিনি। জুজখোলা গ্রামের পাট চাষী হাবিুর রহমান জানান পাটের দামের সাথে সাথে পাটকাঠির দাম পাওয়ায় ক্ষতি কিছুটা লাঘব হয়েছে।
তালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাশ জানান, গত বছর চাষীরা মনপ্রতি ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা করে পাট বিক্রি করলেও চলতি বছর সেই পাটের দাম বেড়ে ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে কৃষকরা বেশ খুশি।
সাতক্ষীরা পাট অধিদপ্তরের মূখ্য পরিদর্শক আশীষ কুমার দাশ বলেন, প্রাকৃতিক কারণে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ বছর জেলায় গত বছরের তুলনায় শতকরা ৩ ভাগ জমিতে পাট চাষ করা হয়েছিল। কিন্তু আম্পান ও অতি বৃষ্টির কারণে পাট চাষ অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ জেলায় খুব ভাল মানের পাট চাষ হয়ে থাকে। পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়াতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার কারণে পাটের ব্যহার্য্য জিনিষ পত্রের প্রতি মানুষের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাটের দাম বেশি বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও জানান, সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে জেলার প্রতি হেক্টরে তিন থেকে সাড়ে তিন টন পর্যন্ত পাট উৎপাদন সম্ভব। এছাড়া গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের দাম মনপ্রতি প্রায় ১ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।