জন্মভূমি রিপোর্ট
বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে বঙ্গবন্ধুর ছবি উপহার দেওয়ার ঘটনায় দলের ভিতরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকায় জাতীয়তাবাদী ঘরানার শিক্ষকসমাজ ও বাগেরহাট বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিষয়টি ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ড. ওবায়দুল ইসলাম।
তিনি জাতীয় সংসদের বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) থেকে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ নিয়ে সাদা দলের শিক্ষকদের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাঁরা বলছেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বিএনপি নেতা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম প্রমাণ করেছেন তিনি সরকারি দলের অনুগত ও তাদের সঙ্গে আঁতাত করে চলেছেন।
ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী সভাপতি হিসেবে ছবিগুলো আমি উপহারস্বরূপ তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছি। এর ওপর আমার কোনো কন্ট্রোল ছিল না। আমি শুধু সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। আমি আপাদমস্তক জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী একজন মানুষ।’
এদিকে সাদা দলের শিক্ষকদের অভিযোগ, ওবায়দুল ইসলাম সরকারপন্থি শিক্ষক সংগঠন নীল দলের সঙ্গে ভিতরে ভিতরে আঁতাত করে চলেছেন। সাদা দলের শিক্ষকদের মতে, যখন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কলাম লেখার কারণে বিএনপিপন্থী শিক্ষক চাকরিচ্যুত হন, তখন ওবায়দুল ইসলামের এমন কর্মকান্ড কোনোভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।
৩০ জুন সন্ধ্যায় একটি কর্মসূচিতে এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদের হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি তুলে দেন। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার স্থিরচিত্র নিয়ে বিএনপিপন্থি ছাত্র-শিক্ষকসহ দলের নেতা-কর্মীরা সমালোচনা করেন।
বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, ‘দলের এত গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এমন একটা কাজ করে নেতা-কর্মীদের তিনি আহত ও হতাশ করেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হয়ে উনার এ কাজ করা মোটেও উচিত হয়নি। এ জায়গায় নীল দলের কোনো শিক্ষক যদি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছবি দিতেন তাহলে ঠিকই বহিষ্কার হতেন।’
এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা বিএনপি নেতা মুনিরুল হক ফরাজী বলেন, ‘দলের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদকের পদে থেকে তিনি এমন একটি কান্ড করেছেন যা শুধু কেন্দ্রই নয়, আমাদের বাগেরহাট বিএনপির জন্যও কলঙ্ক তৈরি করেছেন। তাঁর জন্য এখন এলাকার বিএনপি নেতা-কর্মীরা মুখ দেখাতে পারছেন না, সর্বত্র প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন।’