জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলায় সুরখালী ইউনিয়নের ভগবতীপুর গ্রামে চাঞ্চল্যকর কিশোরী ধর্ষণ ঘটনায় র্যাব-৬ আরও তিন আসামীকে গতকাল গ্রেফতার করেছে। এরই সাথে বেরিয়ে এসেছে ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর কাহিনী। র্যাবের এক চৌকস দল প্রযুক্তির ব্যবহার করে তাদের নোয়াখালী, বরিশাল এবং খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
র্যাব-৬ খুলনা সদর দপ্তরের সদর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মো. বদরুদ্দোজা এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নোয়াখালী জেলার চরজব্বার এলাকা থেকে গণধর্ষণের মূলহোতা নাজমুল গোলদার (৩০), পিতা- আমের আলী গোলদার, সাং- কল্যাণশ্রী এবং অন্যতম সহযোগী রাসেল শেখ (২৮), পিতা- গফুর শেখ, সাং- রায়পুর ডুমুরিয়া থেকে গ্রেফতার হয়। মামলার অপর আসামী মৃত্যুঞ্জয় সরকার, পিতা- হরিদাস সরকার, সাং- ভগবতীপুর গত ১৭ নভেম্বর বরিশাল জেলার নতুন বাজার এলাকা থেকে র্যাব-৬ গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীগণ গণধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি র্যাবের কাছে স্বীকার করে।
এছাড়া গত ২৩ অক্টোবর রাতে ধর্ষণ ঘটনার পরেই গাওঘরা গ্রাম থেকে জুয়েল সরদার (২৫), বারআড়িয়া পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল আশিক ইকবাল (২৬), সুরখালীর রুবেল শেখ (২৪) পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। এসময় বাকী ৩ আসামী পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পলাতক ছিল।
ভিকটিম তার এজাহারে উল্লেখ করেন, তিনি দর্জি কাজ করে পরিবারের সাথে বসবাস করে আসছিলেন। অনুমান ১ বছর পূর্বে নাজমুল গোলদারের সাথে ভিকটিমের পরিচয় ঘটে। পরিচয়ের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। গত ২৩ অক্টোবর ভিকটিমকে কনসার্ট এ নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাতে নাজমুল গোলদার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে কৌশলে ভগবতীপুর গ্রামের কেঁচুরাবাদ সুইচ গেটের নিকট তার নিজ ঘেরের পাশে ভদ্রা নদীর চরে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব থেকেই নাজমুল তার অন্যান্য বন্ধুদেরকে ডেকে রাখে। এরপর নাজমুল ভিকটিমের সাথে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল আচরণ করতে থাকে। ভিকটিম এমন আচরণ বুঝতে পেরে সাহায্যের জন্য তার নিজ মোবাইল থেকে পরিচিত ব্যক্তিদের নিকট ফোন করার চেষ্টা করলে নাজমুল গোলদার তার ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এর পরেই অন্যান্যরা পালাক্রমে ভিকটিমকে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য আসামীরা ভিকটিমকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটরসাইকেল যোগে ভগবতীপুর গ্রামের কাটাবুনিয়া খেয়াঘাটে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। পরে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে বটিয়াঘাটা থানায় আসামীদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শওকত কবীর বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সকল আসামী গ্রেফতার হয়েছে। মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ ৬ আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।