প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের আলোচনায় একগুচ্ছ বিষয় উঠেছিল। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো-আগামী এক বছরে বাংলাদেশে পাঁচটি প্রকল্পের কাজ শেষ করবে ভারত। এই প্রকল্পগুলো হলো রামপাল-মৈত্রী বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন, আখাউড়া-আগরতলা, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি এবং খুলনা-মোংলা রেল সংযোগ। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরও তিনটি দ্বি-পাক্ষিক বিষয়ে সহযোগিতার বার্তাও দিয়ে গেছেন শ্রিংলা।
স¤প্রতি সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই কথাই জানিয়ে গেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব এসব বিষয় জানিয়ে বলেছেন, খুব তাড়াতাড়ি জয়েন্ট কলসালটেটিভ কমিশনের বৈঠক হবে। সেখানে দুই বিদেশমন্ত্রী ভারত ও বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবেন। ভারতের উদ্যোগে যে সব প্রকল্প হচ্ছে, সে বিষয়েও কথা হবে। এই প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি খতিয়ে দেখার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জয়েন্ট মনিটরিং মেকানিজমও তৈরি করা হবে।
মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারত প্রস্তাব দিয়েছে, তারা ঢাকার সঙ্গে অল্প কিছু বিমান চালাবে। সেখানে কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও চিকিৎসার জন্য যারা ভারতে আসতে চান, তারা যাতায়াত করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে আরও তিনটি বিষয় জানিয়েছেন শ্রিংলা। মুজিববর্ষে ভারত বঙ্গবন্ধুর সম্মানে একটি ডাকটিকিট বের করবে। তাছাড়া করোনা নিয়ে ভারত ঢাকাকে সবধরনের সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি সীমান্ত নিয়ে কোনোরকম সমস্যা হলে তা দ্রæত মিটিয়ে ফেলা হবে।
এই প্রসঙ্গেই সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও এক দেশে অপরাধ করে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়া অপরাধীদের ধরা ও তাদের প্রত্যর্পণ করা নিয়েও কথা হয়েছে।
অনুরাগ জানিয়েছেন, শ্রিংলা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দুই সচিবের মধ্যে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব ভারতে আটকে থাকা বাংলাদেশের তাবলিগ প্রতিনিধিদের সে দেশে ফেরার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। শ্রিংলা জানিয়েছেন, অনেকে বাংলাদেশে ফিরে গেছেন। বাকিরা যাতে দ্রæত ফিরতে পারেন, সেই চেষ্টা করা হবে। ভারতের আদালত ভিসা সংক্রান্ত আইন ভঙ্গ করার জন্য বিদেশ থেকে আসা তাবলিগের প্রতিনিধিদের জরিমানা করে নিজেদের দেশে ফেরত যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তারপর এক হাজার ৩০ জনের মধ্যে ৫৫০ জন নিজেদের দেশে ফিরে গেছেন। বাকিদেরও দ্রæত ফেরানোর চেষ্টা চলছে।
অনুরাগের মতে, শ্রিংলার এই সফর ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশকে ভারত কতটা গুরুত্ব দেয়, এই সফরের মধ্য দিয়ে তা আবার বোঝা গেল। তাছাড়া দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বও যোগাযোগের মধ্যে থাকবেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কথা থেকে এটাও বোঝা যাচ্ছে যে, ভারত এখন বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বাড়াবার চেষ্টা করছে। শুভেচ্ছার প্রমাণ স্বরূপ দ্রæত তারা প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করতে চাইছে।