কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : ভুয়া তথ্যের হলফনামা তৈরী করে বাল্যবিয়েতে সহযোগিতা করায় দৌলতপুর উপজেলার সংক্ষুব্ধ এক ছেলের মা ওই নোটারি আইনজীবির উপর চড়াও হয়ে নির্যাতন ও লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরের ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দকে অভিযোগ দিয়েছেন। এঘটনার ফুটেজ ধারন করার অপরাধে ওই নোটারি আইনজীবির গুন্ডাবাহিনীর হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ বিজয় টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি রিয়াজুল ইসলাম সেত্রু। তার অফিসে হামলা করে দুইটা পিসি ক্যামেরাসহ সংবাদ সরঞ্জাম ভাংচুর করেছে বলেও অভিযোগ সেতুর। এমন ঘটনা অবগত বলে সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা আইনজীবী সমিতি কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শেখ আবু সাইদ জানান, এঘটনায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আইনী সহযোগিতা চাইলে দেয়া হবে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নোটারি আইনজীবী বলেন, ‘আইনজীবীর চেম্বারে কোন বাল্যবিয়ে হওয়ার সুযোগ নেই’। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে অধিকাংশ নোটারী আইনজীবী মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ভুয়া তথ্য সম্বলিত হলফনামা নোটারি তৈরী করে দিয়ে কার্যত: বাল্যবিয়েতে সহযোগিতা করে আসাছেন। তাদের মধ্যে এ্যাড. সিরাজ প্রামানিকের নাম শীর্ষস্থানে রয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার একজন ভুক্তভোগী ও সংক্ষুব্ধ মা এমন অভিযোগ নিয়ে নোটারি আইনজীবী এ্যাড. সিরাজ প্রামানিকের চেম্বারে এসে চড়াও হন এবং জুতা খুলে মারতে উদ্যোত হন, এসময় পাল্টা ওই নারী আইনজীবীর নেতৃত্বে চেম্বারের অন্যদের দ্বারা লাঞ্ছিত হন। এসময় ঘটনাস্থলে শোরচিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে আক্রান্ত নারীকে উদ্ধার করে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের নিয়ে যান।
সোমবার দুপুরে আদালত চত্বরের ওই ঘটনায় লাঞ্ছিত ও সংক্ষুব্ধ দৌলতপুর উপজেলার বাসিন্দা(চ্ছদ্যনাম) মাহফুজা বেগম (৩২)র অভিযোগ, ‘আমার ছেলের বয়স ১৪ বছর। ৯ম শ্রেনীতে পড়ে। একই স্কুলের ৭ম শ্রেনির এক মেয়েকে নিয়ে এসে এই নোটারি আইনজীবী সিরাজ প্রামানিকের কাছ থেকে ছেলের বয়স ২১বছর আর মেয়ের বয়স ১৮ বছর দেখিয়ে ভুয় তথ্যের হলফনামা তৈরী করে তার চেম্বারেই কাজী ডেকে বিয়ে করিয়ে দিয়েছে মোটা টাকার বিনিময়ে। কোর্টে আসে মানুষ ন্যায় বিচারের জন্য, অথচ এই ভুয়া নোটারি উকিলরাই অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের জীবন নষ্ট করে দিচ্ছেন। আমি এর বিচার চাই।
জেলা প্রশাসক এহতেশাম রেজা বলেন, এ ধরনের ভুয়া তথ্যের নোটারি হলফনামা করে বাল্যবিয়ের অভিযোগ প্রায়ই পাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে জেলা জজের কার্যালয় হতে। ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পত্র প্রেরণ করে জানানো হয়েছে। ঘটনাটিও শুনেছি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সাথে বসে এই সুরাহা করার উদ্যোগ নেয়া হবে।