দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। শুধু বাড়ছে বললে কম বলা হবে। সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, তাতে বিশেষজ্ঞরাও শঙ্কিত। তাঁদের আশঙ্কা, চলতি মাসে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি আগের মাসের মতো স্বস্তিকর থাকবে না। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিধি-নিষেধের মেয়াদ আরো ১০ দিন বাড়িয়ে ১৬ জুন পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। এই সময়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখতে হবে। খাবারের দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার খাওয়া যাবে, বন্ধ করতে হবে রাত ১০টার মধ্যে। কিন্তু এই সময়ের পরও যে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ বিধি-নিষেধ মেনে চলার কোনো প্রবণতা কোথাও দেখা যাচ্ছে না। দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ঢিলেঢালা ভাব দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নতুন ভেরিয়েন্ট ছড়িয়েছে। কারণটি খুবই স্পষ্ট। সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্তবর্তী এলাকায় স্থানীয়ভাবে লকডাউন বা কঠোর বিধি-নিষেধের ব্যবস্থা জারি করা হলেও প্রথম দু-এক দিন কিছুটা কড়াকড়ির পর চলছে ঢিলেঢালা অবস্থা। সেখানে সাধারণ মানুষও বিধি-নিষেধের কড়াকড়ি মানছে না। সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরায় সাধারণ মানুষ লকডাউন মানছে না। হাট-বাজারে মানুষের আনাগোনা একেবারেই স্বাভাবিক। হালখাতা উৎসবও করছে অনেক প্রতিষ্ঠান। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় দোকানপাট বন্ধ থাকে। অভিযান শেষে আবার সব কিছুই আগের মতো! রাজশাহীতে যে হারে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে, সেভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা নেই বললেই চলে। কারো শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দিলেও তাদের মধ্যে বিধি-নিষেধ মানার প্রবণতা নেই। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় পর্যায়ক্রমে ১৬টি গ্রামের সাধারণ মানুষের চলাচলের ওপর কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হলেও কমছে না শনাক্তের হার।
বিধি-নিষেধ না মানার অনিবার্য ফল হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। অনেক হাসপাতালে শয্যাসংখ্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি থাকছে। চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের আইসিইউ সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও বলছেন, দেশে এখন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী যেসব জেলায় সংক্রমণ বেশি, সেখানে লকডাউন জোরদার করতে হবে। এসব জেলায় সংক্রমণ শনাক্তের জন্য পরীক্ষা ও কন্টাক্ট ট্রেসিং কার্যক্রম বাড়াতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বিধি-নিষেধ কঠোরভাবে মানতে হবে
Leave a comment