সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : বিশ্বজুড়ে বিপন্ন ৩১ প্রজাতির প্রাণী সুন্দরবনকে আশ্রয় করেই টিকে আছে। এর মধ্যে ১২ প্রজাতির প্রাণী সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এই বনে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে বাংলাদেশের উপকূলের মানুষকেই শুধু রক্ষা করছে না এই বন, বিপন্ন প্রাণীর শেষ আশ্রয়স্থলও হয়ে উঠেছে সুন্দরবন।
পন্ন প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম বেঙ্গল টাইগার, মেছো বাঘ, ছোট মদনটাক, গ্রেট নট পাখি, মাস্ক ফিনফুট পাখি, রাজগোখরা, জলপাই রঙের কাছিম, দুই প্রজাতির ডলফিন (ইরাবতী ও গাঙ্গেয়), দুই প্রজাতির উদ্বিড়াল ও লোনাপানির কুমির। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দুই অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান ও আবদুল আজিজের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন, বাংলাদেশের একাধিক প্রতিবেদনেও বিশ্বের অন্যতম জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা হিসেবে সুন্দরবনের কথা বলা হয়েছে।
প্রকৃতি ও বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা সুন্দরবনের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য সৃষ্টির প্রধান কারণ হিসেবে এর সৃষ্টি প্রক্রিয়া ও ভৌগোলিক অবস্থানের কথা বলছেন। হিমালয় থেকে নেমে আসা মিষ্টি পানির প্রবাহের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের লবণপানির মিশ্রণের ফলে এই বনে বিশেষ প্রতিবেশব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। কাদামাটিতে গড়ে ওঠা ওই বনটির ৫২ শতাংশই সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষিত, ফলে নানা হুমকি ও সমস্যা সত্ত্বেও এই বন এখন পর্যন্ত শুধু বাংলাদেশের বন্য প্রাণীদের জন্য, বিশ্বের প্রাণসম্পদের অন্যতম বড় আধার হিসেবে স্বীকৃত।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো গত ডিসেম্বর মাসে এক প্রতিবেদনে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যকে বিশ্বের জন্য অসামান্য সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
সুন্দরবনের বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী রক্ষায় সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে বলে জানান প্রধান বনসংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, সুন্দরবন থেকে সম্পদ আহরণ ও পর্যটক প্রবেশের বিষয়টি এখন সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য আরও সমৃদ্ধ হবে।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ইউনেসকোর পক্ষ থেকে সুন্দরবনের জন্য ১০টি হুমকি চিহ্নিত করা হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, দূষণ, অবৈধ তৎপরতা ও পশুর নদের খননকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটি বলছে, সুন্দরবন হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র শ্বাসমূলীয় বন, যেখানে এখনো পলি পড়ে পড়ে নতুন ভূমির গঠন হচ্ছে। এসব ভূমিতে প্রাকৃতিকভাবেই শ্বাসমূলীয় বনভূমি গড়ে উঠছে। সুন্দরবনের অন্য অঞ্চলগুলো থেকে সেখানে হরিণ, সাপ, বাঘের মতো প্রাণীরা এসো বসতি গড়ছে।
বিশ্বজুড়ে বিপন্ন ৩১ প্রজাতির প্রাণী সুন্দরবনকে আশ্রয় করেই টিকে আছে। এর মধ্যে ১২ প্রজাতির প্রাণী সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এই বনে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে বাংলাদেশের উপকূলের মানুষকেই শুধু রক্ষা করছে না এই বন, বিপন্ন প্রাণীর শেষ আশ্রয়স্থলও হয়ে উঠেছে সুন্দরবন।
পন্ন প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম বেঙ্গল টাইগার, মেছো বাঘ, ছোট মদনটাক, গ্রেট নট পাখি, মাস্ক ফিনফুট পাখি, রাজগোখরা, জলপাই রঙের কাছিম, দুই প্রজাতির ডলফিন (ইরাবতী ও গাঙ্গেয়), দুই প্রজাতির উদ্বিড়াল ও লোনাপানির কুমির। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দুই অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান ও আবদুল আজিজের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন, বাংলাদেশের একাধিক প্রতিবেদনেও বিশ্বের অন্যতম জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা হিসেবে সুন্দরবনের কথা বলা হয়েছে।
প্রকৃতি ও বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা সুন্দরবনের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য সৃষ্টির প্রধান কারণ হিসেবে এর সৃষ্টি প্রক্রিয়া ও ভৌগোলিক অবস্থানের কথা বলছেন। হিমালয় থেকে নেমে আসা মিষ্টি পানির প্রবাহের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের লবণপানির মিশ্রণের ফলে এই বনে বিশেষ প্রতিবেশব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। কাদামাটিতে গড়ে ওঠা ওই বনটির ৫২ শতাংশই সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষিত, ফলে নানা হুমকি ও সমস্যা সত্ত্বেও এই বন এখন পর্যন্ত শুধু বাংলাদেশের বন্য প্রাণীদের জন্য, বিশ্বের প্রাণসম্পদের অন্যতম বড় আধার হিসেবে স্বীকৃত।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো গত ডিসেম্বর মাসে এক প্রতিবেদনে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যকে বিশ্বের জন্য অসামান্য সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
সুন্দরবনের বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী রক্ষায় সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে বলে জানান প্রধান বনসংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, সুন্দরবন থেকে সম্পদ আহরণ ও পর্যটক প্রবেশের বিষয়টি এখন সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য আরও সমৃদ্ধ হবে।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ইউনেসকোর পক্ষ থেকে সুন্দরবনের জন্য ১০টি হুমকি চিহ্নিত করা হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, দূষণ, অবৈধ তৎপরতা ও পশুর নদের খননকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটি বলছে, সুন্দরবন হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র শ্বাসমূলীয় বন, যেখানে এখনো পলি পড়ে পড়ে নতুন ভূমির গঠন হচ্ছে। এসব ভূমিতে প্রাকৃতিকভাবেই শ্বাসমূলীয় বনভূমি গড়ে উঠছে। সুন্দরবনের অন্য অঞ্চলগুলো থেকে সেখানে হরিণ, সাপ, বাঘের মতো প্রাণীরা এসো বসতি গড়ছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা অনেক কিছু সৃষ্টি করতে পারব। পদ্মা সেতু বানাতে পারব, নতুন নতুন শহর গড়ে তুলতে পারব। কিন্তু আরেকটা সুন্দরবন গড়ে তোলা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের উপকূলে এ পর্যন্ত যত ঝড় আঘাত করেছে, তার অর্ধেকের বেশি সুন্দরবনের ওপর দিয়ে গেছে। ফলে এই বন বারবার আমাদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করে গেছে। একই সঙ্গে এর অপরূপ প্রতিবেশব্যবস্থার কারণে বিশ্বের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য অন্যতম বড় আশ্রয়স্থল হয়ে আছে এই বন।’
মেছো বাঘ দেখতে বেঙ্গল টাইগারের চেয়ে কিছুটা ছোট, আবার বিড়ালের চেয়ে বেশ বড়। এই প্রাণী একসময় দেশের বনে তো বটেই, গ্রামের ঝোপঝাড়েও দেখা যেত। এই প্রাণী এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়ে বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় ঢুকে পড়েছে। এই তালিকায় আরও নাম আসবে বেঙ্গল টাইগার, দুই প্রজাতির ডলফিন, মদনটাক ও গ্রেট নটের মতো পাখি। রাজগোখরার মতো সাপ ও উদবিড়ালের মতো জলজ প্রাণী। জলপাই রঙের কাছিমও বিশ্বজুড়ে বিপন্ন। এরা সবাই সুন্দরবনের বাসিন্দা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল আজিজ এই প্রতিবেদককে বলেন, সুন্দরবনের বন্য প্রাণীর জন্য এখন সবচেয়ে বড় হুমকি মিঠাপানির সরবরাহ কমে যাওয়া এবং লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া। ইরাবতী ডলফিন সম্প্রতি মোংলায় দেখা গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি লবণপানির ডলফিন। লবণাক্ততা বাড়লে তা সুন্দরবনের মিঠা ও মিশ্র পানিতে টিকে থাকতে পারে, এমন প্রাণীদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেন, সুন্দরবনে দুই প্রজাতির প্রায় ৩০০টি উদবিড়াল রয়েছে। কোনো একটি সুনির্দিষ্ট বনের মধ্যে এত উদবিড়াল থাকা বিরল ঘটনা। ১৯০টি লোনাপানির কুমির রয়েছে এই বনে, যা বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকা থেকে বিপন্ন হয়ে শুধু সুন্দরবনে টিকে আছে।
বন্য প্রাণী গবেষকেরা বলছেন, সুন্দরবনে ২০০টি ইরাবতী ডলফিন ও ১৬০টি গাঙ্গেয় ডলফিন রয়েছে। এই দুই প্রজাতির ডলফিনের সংখ্যা পৃথিবীর মধ্যে সুন্দরবনেই সবচেয়ে বেশি। পরিযায়ী পাখি গ্রেট নট ও চামচঠুঁটো বাটানও বিশ্বজুড়ে বিপন্ন। এই পাখিরা সুন্দরবনে ভালোভাবেই টিকে আছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান এই প্রতিবেদককে বলেন, বিপন্ন প্রাণীদের রক্ষা করতে হলে সবার আগে সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে। এই বনের চারপাশে গড়ে ওঠা শিল্পকারখানা ও তার দূষণ বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে উজান থেকে মিঠাপানির সরবরাহ বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।