জন্মভূমি ডেস্ক : পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২৫০ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন। আসন সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন। তৃতীয় স্থানে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি। এ অবস্থায় ইমরানের দলের সরকার গঠন করতে হলে জোটের পথেই হাঁটতে হবে। পিএমএল-এন নেতা নওয়াজ শরিফ বিজয়ী ভাষণে জোট গঠনের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন এবং এজন্য দৌড়ঝাঁপও শুরু করেছেন এরই মধ্যে। কিন্তু পিটিআই এখনও জোট সম্পর্কিত কিছু জানায়নি।
শুক্রবার লাহোর শহরে নওয়াজ শরিফের দলের কার্যালয়ের বাইরে সমর্থকদের উদ্দেশে এক বক্তৃতায় নওয়াজ শরীফ স্বীকার করেছেন যে তার দল পিএমএল-এন এককভাবে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় আসনে জয়ী হতে পারেনি। তিনি অন্য প্রার্থীদের তার সাথে জোটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
পিএমএল-এন ও পিপিপি জোটে আগ্রহী হলেও সবার নজর পিটিআই কী সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকে। ইমরান খানের যে বক্তব্য প্রচারিত হয়েছে, সেখানে তিনি ভোটারদের অভিবাদন জানিয়েছেন এবং গত দুই বছরের রাজনৈতিক অত্যাচার-নিপীড়নের কথাও বলেছেন। কিন্তু সরকার গঠন সংক্রান্ত কোনো পরিকল্পনার কথা জানাননি। তিনি বরং দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে জয়ের কথা বলেছেন। শুক্রবার রাতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইমরান খানের বক্তব্য প্রচার করা হয় এক্সে।
অন্যদিকে নওয়াজ শরিফ আজ শনিবার সকালে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো এবং আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে বৈঠক করে তাদেরকে একত্রে কাজ করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মোহসিন নাকভির বাসভবনে পিপিপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন শাহবাজ শরিফ। সেখানেও নওয়াজ শরিফের একত্রে কাজ করার বার্তাই তুলে ধরেন বলে সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে জিও টিভি।
পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৬৫টি আসনের মধ্যে ২৫০ আসনের ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯৯ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপরই পিএমএলএন ৭১ আসনে, পিপিপি ৫৩ আসনে ও এমকিউএম ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১০টি আসন। সরকারি ফল মোতাবেক পিটিআই বা যেকোনো দলকেই সরকার গঠন করতে হলে জোটের পথে আগাতে হবে। পিএমএল-এন ও পিপিপি জোট গঠন চূড়ান্ত হয়ে গেলে সরকার গঠন না করে বিরোধী দল হিসেবেও থাকতে হতে পারে অর্থাৎ ক্ষমতার মসনদ অধরাই রয়ে যেতে পারে ইমরানের দল পিটিআইয়ের।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোট গ্রহণ হয় বৃহস্পতিবার। কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন। পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মোট আসনসংখ্যা ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। এ ছাড়া বাকি ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এসব আসনের মধ্যে ৬০টি নারীদের ও ১০টি সংখ্যালঘুদের।