নওয়াপাড়া অফিস
জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেতে আমডাঙ্গা খাল পুন:খনন ও বিল কপালিয়ায় দ্রæত টিআরএম বাস্তবায়নের দাবিতে অভয়নগরে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত হাজারো নারী-পুরুষ পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। শনিবার সকাল থেকে দপুর পর্যন্ত আমডাঙ্গা খাল অভিমুখে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়।
যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলা সদর নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউট থেকে বেলা ১১টায় শুরু হওয়া পদযাত্রার উদ্বোধন করেন নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন। এ সময় উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ। এ সময় আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তৃতা করেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নেতা এইচ এম মহসিন।
উদ্বোধনের পর ভবদহ অঞ্চাল থেকে আগত প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ পদযাত্রায় অংশ গ্রহণ করেন। তারা যশোর-খুলনা মহাসড়ক ধরে ৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে দুপুর দেড়টায় আমডাঙ্গা খাল পড়ে পৌঁছায়। পদযাত্রার সময় তাদের হাতে নানা দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড বহন করতে দেখা যায়। তাতে লেখা রয়েছে এক বছর আগে বরাদ্দ হওয়া আমডাঙ্গা খাল পুন:খনন প্রকল্প দ্রæত চালু কর, মানবিক বিপর্যায় রোধে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত কর, বিল কপালিয়ায় টিআরএম প্রকল্প চালু কর, এলাকার সব নদী খাল দখলমুক্ত কর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি নিশ্চত কর ইত্যাদি।
পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারি সুন্দলী গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ সন্ন্যাসী কবিরাজ(৮৫) বলেন, ভবদহের বিলে তার ৫ বিঘা ধানী জমি রয়েছে। তার পরিবার কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ৫/৬ বছর যাবত বিলে কোন ফসল হয় না। তার পরিবারে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়া বর্ষার মৌসুম এলেই তার বাড়ির উঠানে কোমর পর্যন্ত জল জমে। ৬ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত ওই জলের মধ্যে তাদের বসবাস করতে হয়।
বেদভিটা গ্রামের কৃষক বিরেন্দ্র নাথ মল্লিক জানান, গত বছর শ্রাবণ মাসে তার বাড়ির উঠানে কোমর পর্যন্ত জল উঠেছিলো আর ওই জল ৮ মাস পর বাড়ি থেকে নামে। জলের সাথে সংগ্রাম করে তাদের বেঁচে থাকতে হয়। তার মতে আমডাঙ্গা খালটি সংস্কার হলে এলাকা এ ভয়াবহ জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে।
পদযাত্রটি আমডাঙ্গা খালে পৌঁছে মানববন্ধনে মিলিত হয়। মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন রণজিত বাওয়ালী, চৈতন্য কুমার পাল, গাজী আব্দুল হামিদ, অধ্যাপক অনিল বিশ^াস, শিবপদ বিশ^াস, আব্দুল আজিজ, সাধন মন্ডল, শেখর বিশ^াস, লুৎফর রহমান, মঞ্জুরুল আলম, পারভীন আক্তার প্রমুখ। এ সময় খাল পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের অবস্থা তুলে ধরে বক্তৃতা করেন দীনোবন্ধ সরকার ও মধুসুদন পাল।