জন্মভূমি ডেস্ক : ভাষা সংগ্রামীদের বেশিরভাগই ইতোমধ্যে প্রয়াত হয়েছেন। একুশের ইতিহাস জানার অন্যতম বড় আশ্রয় এখন বই। সেগুলো পাঠের মধ্য দিয়েই নতুন প্রজš§ ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানছেন। উদ্দীপ্ত হচ্ছেন। একুশের এ চেতনা প্রজš§ থেকে প্রজšে§ ছড়িয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে একুশের নানা কবিতা ও গান। এর মধ্য দিয়েই প্রজš§ নিজেদের শানিত করছে।
এ দেশের কবি, সাহিত্যিক, সুরকার, গীতিকাররা একুশকে ধারণ করেছেন তাদের লেখায়, সুরে ও কণ্ঠে। আর সেসব গান, কবিতা অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছে আজও। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি/ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু-গড়া এ ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি।’ এ একটি গান আমাদের একুশের চেতনার সঙ্গে এমনভাবে মিশে আছে, যা আমরা কখনই ভুলতে পারি না।
এ গান শুনলেই মনে হয় আমরা ১৯৫২ সালের সেই দিনটিতে ফিরে গেছি-যেদিন সালাম, রফিক, জব্বাররা মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী রচিত এ গান চির অম্লান। একুশের আরেকটি গান এখনো সবার মুখে মুখে ফেরে। সেটি হলো-‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়।’ এমনই অনেক গানে আমরা পাই একুশকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
গানের মতো কবিতায়ও বারবার উঠে এসেছে অমর একুশে। একুশের প্রথম কবিতাটি লিখেছেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী। সেই কবিতার চরণে আছে, ‘এখানে যারা প্রাণ দিয়েছে/রমনার ঊর্ধ্বমুখী কৃষ্ণচূড়ার তলায়/ সেখানে আগুনের ফুলকির মতো/এখানে ওখানে জ্বলছে অসংখ্য রক্তের ছাপ/সেখানে আমি কাঁদতে আসিনি।’ কবিতাটির আরেক জায়গায় আছে ‘যারা আমার অসংখ্য ভাইবোনকে/যারা আমার মাতৃভাষাকে নির্বাসন দিতে চেয়েছে/তাদের জন্য আমি ফাঁসির দাবি করছি।’
আহসান হাবীব তার মিছিলে অনেক মুখ কবিতায় লিখেছেন ‘মিছিলে অনেক মুখ/ দেখো দেখো প্রতি মুখে তার/সমস্ত দেশের বুক থরো থরো/উত্তেজিত/শপথে উজ্জ্বল!/সূর্যের দীপ্তিতে আঁকা মিছিলের মুখগুলি দেখো/ দেখো দৃপ্ত বুক তার/ দেখো তার পায়ের রেখায়/ দেশের প্রাণের বন্যা উচ্ছল উত্তাল।’