অন্য থানার এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভিকটিমের বাড়ি নছনছের অভিযোগ
মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরে বড় বোনকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা ছোটভাই মিন্টু হোসেনকে রাতে বাড়ি থেকে উঠিয়ে এনে বেধড়ক মারপিট করে। দুইদিন পর শুক্রবার সকালে মিন্টুর অসুস্থ মায়ের মৃত্যু হয়। এ দিন বিকেলে দুই বোন ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে তাদেরকে মারপিটে আহত করে। শুধু তাই নয়, এ সময় তাদের উদ্ধার করতে আসলে সন্ত্রাসীরা ছোটভাই মিন্টুকে মারপিট করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা আহত তিন ভাই-বোনকে উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আর এ ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার সন্ধ্যায় যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কুয়াদা বাজারে। এ ব্যাপারে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তবে অভিযোগ করা হয়েছে পার্শ্ববর্তি যশোর কোতয়ালী মডেল থানার এএসআই তৌহিদুল ইসলামের নেতেৃত্বে শনিবার সকালে সন্ত্রাসীরা ভূক্তভোগী মিন্টুর বাড়ি তছনছ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রশাসনসহ এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
ভোজগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ও এলাকাবাসী জানায়, মনিরামপুর উপজেলার জামজামি গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের বড় মেয়ে তানিয়া খাতুন স্বামী-সন্তান নিয়ে পিতার বাড়িতে বসবাস করেন।তানিয়া অভিযোগ করেন পার্শ্ববর্তি সিরাজসিঙ্গা গ্রামের হাবিবুর রহমান, লিটন হোসেন ও মাহাবুবুর রহমান প্রায়ই তাকে উত্যক্ত করে আসছে। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে ছোটভাই মিন্টু হোসেনের সাথে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। অভিযোগ রয়েছে এ ঘটনার রেশ ধরে গত বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে হাবিব, মাহাবুব ও লিটনের নেতৃত্বে ৭/৮ জন যুবক বাড়ি থেকে মিন্টুকে ধরে এনে মারপিট করে। এ দিকে দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মিন্টুর মা জোহরা বেগমের মৃত্যু হয় শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে।
মায়ের দাফন সম্পন্নের পর দুই বোন তানিয়া খাতুন ও শিফালী খাতুন বিকেলে বাড়ি থেকে রওনা হয় কুয়াদা বাজারে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে সন্ধ্যার পর কুয়াদা বাজারে ওয়ালটন শোরুমের সামনে পৌছলে হাবিব, মাহাবুব ও লিটনের নেতৃত্বে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা লাঠিসেটা নিয়ে দুবোনের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। খবর পেয়ে ছোটভাই মিন্টু আসে তাদের উদ্ধার করতে। অভিযোগ রয়েছে এসময় সন্ত্রাসীরা তাকেও মারপিট করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা আহত তিন ভাই-বোনকে উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে ওই রাতেই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
মিন্টুর ফুফা শ্রমিকলীগ নেতা আবদুর রাজ্জাকসহ স্থানীয়রা অভিযোগ করেন পার্শ্ববর্তি যশোর কোতয়ালী মডেল থানার এএসআই তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে শনিবার সকালে সন্ত্রাসীরা ভূক্তভোগী মিন্টুর বাড়ি তছনছ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রশাসনসহ এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাড়ি তছনছের অভিযোগ অস্বীকার করে এএসআই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কোতয়ালী থানার একটি অভিযোগের ভিত্তিতে মনিরামপুরের জামজামি গ্রামে মিন্টুর বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আসামিদের আটকের ব্যাপারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, কোতয়ালী থানার এএসআই তৌহিদুল ইসলামের বিষয়টি জানার পর উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।