রিপনচন্দ্র মল্লিক, মাদারীপুর : মাদারীপুরে শ্রেণিকক্ষে দুষ্টুমি করায় ১২ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্রকে বেত দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে গেলে দরজা বন্ধ করে রুমের ভেতর আটকিয়ে পরিবারের আরো ৪ সদস্যকে শিক্ষকের নেতৃত্বে গণপিটুনী দেয় এলাকাবাসী। পরে ত্রিপল নাইনে কল পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ। রোববার বিকেলে ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজপাড়া আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক ফকির মোক্তারুজ্জামানের বাড়ি বাগেরহাটের রামপালে। একবছর আগে ওই মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, রোববার দুুপুরে বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি করে মাদারীপুর শহরের কুকরাইল এলাকার আবির হোসেন মৃধা। বিষয়টিতে ক্ষিপ্ত হয়ে যান ডাসার উপজেলার পশ্চিম মাইজপাড়া আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ফকির মোক্তারুজ্জামান। পরে দুই শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী আবিরের হাতপা চেপে ধরে বেত দিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠে শিক্ষকের ওই বিরুদ্ধে। ভয়ে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে আবির। বিষয়টি জানতে বিকেলে মাদ্রাসায় যায় আবিরের পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় তাদের একটি রুমের ভেতর আটকিয়ে রাখা হয়। পরে অভিযুক্ত শিক্ষকের নেতৃত্বে আবিরের বাবাসহ আরো ৪ জনকে গণপিটুনী দেয় এলাকাবাসী। জরুরি সেবা ত্রিপল নাইনে কল পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিক্ষার্থীসহ পরিবারের ৫ জনকে। আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী আবির হোসেন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বলেন, ‘আমার কোন দোষ ছিল না। হুজুর আমাকে খালি খালি পিটাইছে। পরে আমি দুপুরের দিকে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি চলে আসি। পরে আমার আব্বু মাদ্রাসায় গেলে হুজুর এলাকার লোকজন নিয়ে আমার আব্বুকেসহ তার সাথে যারা মাদ্রাসায় গেছে সবাইকে মারছে।
শিক্ষার্থী আবিরের বাবা জামাল মৃধা বলেন, ‘আমার ছেলেকে মানুষ হওয়ার জন্য মাদ্রাসায় পাঠিয়েছে। অহেতুক হুজুর আমার ছেলেটাকে পিটাবে কেন? সেটা জানতে গেলে আমাদের ওপর হামলা করে। এই ঘটনার আমি সুষ্ঠু বিচার দাবী করি।’
এই বিষয়ে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০ জনের নামে মামলা করে ভুক্তভোগীর পরিবার। পরে অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষককে মোক্তারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে চলছে অভিযান।