অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। দৃশ্যত সবাই মার্কিন ভিসানীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ মার্কিন চাওয়ার সঙ্গে সরকারি দল, রাজপথের বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ-কারো চাওয়ারই অমিল নেই। তবে মুখে স্বাগত জানালেও উদ্বেগ রয়েছে সব মহলেই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি অনুযায়ী-যারাই বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে, তারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না। দৃশ্যত নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। যদিও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভিসানীতি সরকার টু সরকারের বিষয়। নির্বাচন কমিশনের এ বিষয়ে কিছু করার নেই।
সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, মুখে না বললেও এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি- উভয় দলই চাপে পড়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ক্ষমতাসীনরা যেমন নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে পারবেন না; তেমনি বিএনপিও নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি বা আন্দোলনের নামে জ¦ালাও-পোড়াও করতে গেলে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে। সেক্ষেত্রে কর্মসূচি দেয়ার ক্ষেত্রে এখন তাদের আরো সতর্ক হতে হবে। তবে সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনে সরকার বদ্ধ পরিকর।
গত শুক্রবার ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় বাধাদানকারী’ ব্যক্তিদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের কিছু সদস্যের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের কথা জানায়।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উভয় দলের ক্ষেত্রেই একটা মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করেছে। যে মতবিরোধ রয়েছে-রাজনৈতিক দলের ‘দেশীয় সমাধান’ ছাড়া তার সমাধান সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সরকারি দলকে নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা ও সঠিক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। আর বিরোধী দলকে সংবিধান ও গণতন্ত্র সমর্থন করে না এমন কোনো দাবিতে অনড় না থেকে সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। কারণ মার্কিন বার্তা সবার জন্যই।