জন্মভূমি ডেস্ক : অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহীগোষ্ঠীর সঙ্গে গৃহযুদ্ধে মিয়ানমার জান্তা সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর আরও ৬৩ সদস্য বাংলাদেশে ঢুকেছে। ফলে এখন পর্যন্ত অনুপ্রবেশকারী সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২৭ জনে। তবে এসব সদস্যকে নিরস্ত্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে রাখা হয়েছে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বলে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পালিয়ে আসাদের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনা, পুলিশ, ইমিগ্রেশন সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। তারা টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে।
এর আগে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্য সংখ্যা ছিল ১১৩। পরে আরও দুজনকে রিসিভ করলে সে সংখ্যা হয় ১১৫। এরপর একসঙ্গে আরও ১১৪ জন প্রবেশ করেন। এতে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ২২৯ জনে। পরে বিভিন্ন সময়ে আশ্রয় নেওয়া জান্তা সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২৭ জনে। তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে।
আগে যারা প্রবেশ করেছেন তারা সবাই এখনো বাংলাদেশেই রয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাও নিচ্ছেন। তাদের নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গ্রুপের তুমুল লড়াই চলছে। তাদের ছোড়া গুলির সিসা ও রকেট লঞ্চার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে উড়ে এসে পড়ছে। এতে ঘুমধুম-তুমব্রু এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন। ইতোমধ্যে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে সে দেশের সরকার যোগাযোগ করেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ আছে। আজ সকালে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আমাদের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তাদের বর্ডার গার্ডের সদস্যদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। এখন তাদের উড়োজাহাজ, নাকি নৌকায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনার মধ্যে আছি।
মন্ত্রী জানান, এর আগে ভারতেও অনেকে (বিজিপি সদস্য) ঢুকে পড়েছিলেন। ভারত থেকে তাদের উড়োজাহাজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মিয়ানমার থেকে এখনো অনেকে আসছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমরাও যোগাযোগ করেছি। এখনো আরও আসছে, আসার সম্ভাবনা আছে। কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের কক্সবাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতীয় সংসদে বলেন, সীমান্তে উত্তেজনার পরিস্থিতি সরকার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে৷ মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে।