জন্মভূমি ডেস্ক : মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জান্তা সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থানের তৃতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর পরই নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলে নেয় সেনাবাহিনী। এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির জনগণ সেনাশাসন মেনে নেয়নি। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ও আন্দোলন গড়ে তোলে। কিন্তু জান্তা বাহিনী সেই আন্দোলনে নজিরবিহীন দমনপীড়ন শুরু করে। হাতে অস্ত্র তুলে নেয় জনতা। এর পর যতই সময় গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহ।
অভ্যুত্থানের তিন বছর পরও সেই সশস্ত্র বিদ্রোহ ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে জান্তা। শুধু তাই নয়, দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে। ফলে পতনের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে মিন অং হ্লাইংয়ের সরকার। আর তাই জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বার্মার সামরিক সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠান ও চার ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা। বিবৃতি মতে, শোয়ে বাইন ফিউ গ্রুপ অব কোম্পানিজ ও পণ্য পরিবহণ প্রতিষ্ঠান মিয়ানমার ফাইভ স্টার লাইন কোম্পানি নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণলালয় বলেছে, ‘গত তিন বছর ধরে সেনাবাহিনী ক্রমাগত সহিংসতা ও সন্ত্রাস ব্যবহার করে বার্মার জনগণকে নিপীড়ন করেছে এবং স্বাধীনভাবে তাদের নিজস্ব নেতা বেছে নেওয়ার ক্ষমতা অস্বীকার করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বেসামরিক এলাকায় হামলা চালানোর জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করেছে।’
নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য জ্বালানি আমদানি ও বিতরণ করে কোম্পানিটি। তা ছাড়া মিলিটারি গ্রুপ মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেডের সঙ্গে লাভ ভাগাভাগি করে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর গত তিন বছরে মিয়ানমারের ওপর কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে সবশেষ গত বছরের আগস্টে দেশটির সামরিক জান্তার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে ওয়াশিংটন।
সেই সময় দেশটির যুদ্ধবিমানের জ্বালানি (জেট ফুয়েল) খাতের সঙ্গে জড়িত বা এতে সহায়তা দেওয়া বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে এই নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করা হয়। এসব যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমা ফেলছে জান্তা বাহিনী।