মোল্লা আব্দুর রব, বাগেরহাট : নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই বাগেরহাট সদর উপজেলার ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেরিবাঁধে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। কয়েক জায়গা ধ্বসেও গেছে নির্মাণাধীন এই বাঁধটির। বাঁধ নির্মাণে বালু এবং নদীর চরের বালু মাটির ব্যবহার ও বাঁধের কাছ থেকে কাছ থেকে মাটি নেওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কাজ শেষের আগেই বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এই বাঁধের স্থায়ীত্ব নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া জোরপূর্বক মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করায় ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), বাগেরহাট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভৈরবের পানি থেকে মুনিগঞ্জ-ভাতছালাবাসীকে রক্ষার জন্য ষাটের দশকে নাজিরপুর উপ-প্রকল্পের অধীনে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ঝড়-জলচ্ছাস ও বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বাঁধটি বেশ নিছু হয়ে গেছে। যার ফলে গেল কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে অমাবস্যা-পূর্ণিমা তিথিতে নদীর পানি উপচে মুনিগঞ্জ, ভাতছালা, ভদ্রপাড়া ও চরগ্রাম প্লাাবিত হত। স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘবে গেল বছরের নভেম্বরে ভাতছালা থেকে মুনিগঞ্জ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এই বাঁধটি সংস্কার শুরু করে পাউবো। ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পূর্বের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফিট উঁচু করা হবে বাঁধটি। জরুরি ভিত্তিতে ডিপিএম (সরাসরি ক্রয়) পদ্ধতিতে ঠিকাদার শেখ শহিদুল ইসলাম এই কাজ বাস্তবায়ন করছেন। চলতি মাসেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, মাত্র ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে বাঁধের পুরো কাজ শেষ করতে প্রকল্পের সময় কিছুটা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন পাউবোর এক কর্মকর্তা।
বাঁধ নির্মাণের ঠিকাদার শেখ শহিদুল ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, ২২ বছর পর এই বাঁধের সংস্কার হচ্ছে। এটা ইমারজেন্সি কাজ। এখানে মাটি কিনে নেওয়ার কোন বরাদ্দ সিডিউলে নেই। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় আমরা নিয়মনিতি মেনেই কাজটা করছি। একটি সুবিধাবাদী মহল শুধু শুধু অপ-প্রচার করছে।
পাউবো বাগেরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, দরপত্র অনুযায়ী এই বাঁধটা ৩ দশমিক ৫ লেভেলে হবে। যাতে কোথাও দুই ফুট, কোথাও চার ফুট উঁচু হবে। জরুরি ফান্ড থেকে এই কাজটি করা হচ্ছে। দরপত্রে বলা আছে, মাটি ও লোকাল ম্যাটেরিয়াল দিয়ে দিয়ে কাজটি করতে হবে। এর জন্য জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের কোন সংস্থান আমাদের নেই।
তিনি আরও বলেন, বাঁধে বালুর ব্যবহার করা যাবে। তবে মাটির পরিমানই বেশি থাকবে। বালুটা আমরা মাঝেই দেই। তবে চেষ্টা করি যত কম দেওয়া যায়।